লোকসভা ভোটে তৃনমূলের আশানুরূপ ফল হয়নি । তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে বাইশে । ফলে লোকসভা ভোটের এই রেজাল্টের পর্যালোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ, বিশেষ করে সরকারি প্রকল্পে কমিশন বা তোলা আদায় করা বেশি করে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর । একথা সত্যি, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বা অন্য নানান উছিলায় শাসকদলের ছোট বড় মাঝারি সমস্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ বড় একটা অংশ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কমিশন তুলেছেন । স্পষ্ট ভাষায় মমতা ব্যানার্জি হুঁশিয়ারি দিয়ে মঙ্গলবার নজরুল মেঞ্চ কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি সভায় বলেছেন, ‘চোরেদের আমি আর ধরে রাখবো না’ । কাউন্সিলরদের সভায় নির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগ তুলে মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ‘গরিবদের জন্য বাংলায় বাড়ি প্রকল্প টাকা থেকেও ২৫ শতাংশ কমিশন দলের লোকেরা নিচ্ছে। আমি সব খবর রাখি । সমব্যথী প্রকল্পে ২০০০ টাকার মধ্যেও ২০০ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে ? দল এসব বরদাস্ত করবে না যারা টাকা নিয়েছেন ফেরত দিয়ে দিন’ ।
দল যাতে আর টাকা তুলতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন তিনি । ‘সরকারি প্রকল্পের এক টাকাও যে নেতাকর্মীদের নেওয়ার অধিকার নেই দলীয় মঞ্চ থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন । কাউন্সিলরদের বেশিরভাগ এখন এলাকায় কাজ না করে প্রমোটিং বা অন্য ধরনের কাজ করায় ব্যস্ত । তার কথায় নিজের এলাকায় কাজ না করে এখন অনেকেই বাড়ি আর প্রমোটিং এর সঙ্গে শুধু সম্পর্ক রাখছেন। এই চুরি ধরলেই অন্য দলে পালিয়ে যাচ্ছেন । অন্য দলে গিয়েও লাভ নেই । সরকারের সব পয়সার হিসেব আছে । পালালে তো আরো ফাঁসবেন তিনি’ ।
আরো অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা বা কাট মানি আদায়ের পাশাপাশি তৃণমূল কর্মীদের অনেকে সরকারি সম্পত্তিও জবর দখল করে নিয়েছেন । কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘অনেকেই সরকারি সম্পত্তি কে নিজের পরিবারের নামে করে নিয়েছেন । জনগণের সম্পত্তি দখল করার অধিকার কারো নেই । তারা সরকারকে ফাঁকি দিয়ে নিজের পরিবারের নামে করে নিয়েছেন, তাও জানি । প্রত্যেকটা ঘটনার তদন্ত হবে’ ।
যাই হোক মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যদি তার কথা অনুসারে কাজ করতে পারেন, যদিও এই কাজগুলি করা সত্যিই খুব কঠিন, তবুও আশা করা যায়, তিনি পুনরায় সাধারণ মানুষের মন আবার জয় করতে পারবেন ।