বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ রাজনীতির সাথে আর এস এসকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না । একজন আর এস এস সদস্য যে নিয়মে চলে, সে একজন রাজনীতি করা নেতার থেকে আলাদা । মোহন ভাগবতের উপস্থিতিতে আর এস এস-এর ক্যাম্পে কাটিয়ে এমনটাই মনে হল রাজ্য বিজেপির চাণক্য মুকুল রায়ের । ক্যাম্পের অনুশাসনে সময় কেমন কাটল জিজ্ঞাসা করায় মুকুল রায় উত্তর দিলেন, “খুব ভালো অনুভব।”
আর এস এস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ একটা নিয়মে চলে । সেখানে যে কেউ সদস্য হতে পারে না । সদস্য হবার আগে বেশ কিছু অনুশাস্ন মেনে চলতে হয় প্রতিটি সদস্যদের । রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা রাজ্য সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় উভয়েই সঙ্ঘের পুরনো স্বয়ংসেবক এবং প্রাচারক । রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ-এর বৈঠক বা বর্গ কেমন হয় এদের জানা থাকলেও একদা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় কিন্তু এই প্রথম আরএসএসের কোনও বৈঠকে উপস্থিত থাকলেন । সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে মুকুল রায়ের এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা বলা চলে ।
সব সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আরএসএসের সমন্বয় বৈঠক হয় । রাজ্য থেকে জেলা সব স্তরেই নিয়মিত এমন বৈঠক হয়ে থাকে। বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ঠিকঠাক রাখতেই এই ধরণের বৈঠক হয়। কিন্তু সেই বৈঠকে সঙ্ঘপ্রধান তথা সর-সঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের উপ্সথিতি অনেকটাই চমকদার ।এর আগে এমন কোনও বৈঠকের কথা মনে করতে পারছেন না সঙ্ঘ কর্তারা যেখানে মোহন ভাগবত সরাসরি উপস্থিত ছিলেন । মুকুল রায় তৃণমূল থেকে দল বদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অনেক দিন ।রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন, গত লোকসভা ভোটে বঙ্গে এতগুলি পদ্ম ফুটেছে মুকুল রায়ের জন্য ।
এবার আর এস এস-এর ক্যাম্পে মুকুল রায়ের যোগ দেওয়াটা বেশ তাৎপর্য পূর্ণ । মোহন ভাগবত রাজ্যে আসার পর টানা দু’দিন ধরে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় চলে বৈঠক। শনি ও রবিবার তাঁতিবেড়িয়া সঙ্ঘের স্কুলে সেই বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়রা হাজির ছিলেন। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সেই বৈঠকে রাজ্যের বাছাই সঙ্ঘ পরিবারের কর্তারা ডাক পেয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ৩৫ সংগঠনের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রধান নেতারা । এই বৈঠকে মোট ২৩৫ জনের মধ্যে ছিলেন মুকুল রায়ও । এর আগে বিজেপিতে মুকুল রায়ের যোগদান নিয়ে আর এস এসের সাথে মনোমালিন্য হয়েছে । কিন্তু তাঁদের নিয়ে কী নীতি সঙ্ঘের তা এদিনই স্পষ্ট করেছেন আরএসএস সুপ্রিমো মোহন ভাগবত। মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকেই তিনি বলেন, “যাঁরা অন্য ভাবধারা থেকে আসছেন তাঁদের স্বাগত জানাতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের সঙ্ঘের অনুশাসনে অভ্যস্ত করতে হবে।”
আর এস এসের সেই অনুশাসনের মধ্যে দু’টো দিন কাটালেন মুকুল রায়। তবে অন্যান্যদের মতো তিনি রাত্রিবাস করেননি। বিশেষ কারণে শনিবার রাতে কলকাতায় ফিরে এলেও রবিবার নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে যান বর্গে। সাধারণত সঙ্গের কোনও কার্যক্রমেই কারও জন্যই কোনও বিশেষ ব্যবস্থা হয় না । সকলের জন্য এক ব্যবস্থা । সেটাই সকলকে মেনে নিতে হয়। এটাই সঙ্ঘের অনুশাসনের অন্যতম বড় বিষয়। আর সেই অনুশাসন মেনে নিয়েই অন্যান্যদের মতো সময় কাটিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে গেরুয়া ধ্বজের সামনে দাঁড়িয়ে দেশমাতৃকার উদ্দেশে প্রার্থনা করা , স্যোব কিছুতেই যোগ দিয়েছেন উৎসাহের সঙ্গে। আর এস এসের দুপুরের মেনুতে ছিল, করলা ভাজা, মুগ ডাল, পাঁচ মিশালি তরকারি, চাটনি ।রাতের ডিনারে ডাল, তরকারি, রুটি, ভাত, একটা করে মিষ্টি ।