বাংলা রাজনীতিতে মুকুল রায় এবং সব্যসাচী সম্পর্ক অনেকটা দাদা ভাইয়ের । মতো বলা যেতে পারে মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূল এসেছিলেন সব্যসাচী দত্ত । লোকসভা নির্বাচনের আগে, গভীর রাতে মুকুল রায় সব্যসাচী দত্তর বাড়িতে গিয়ে লুচি আলুর দম খেয়ে এসেছিলেন । তাই নিয়ে দলের ভেতরে বিতর্ক কম হয়নি । বলা যেতে পারে, সেখান থেকেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কালো তালিকায় চলে এসেছিলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত ।
এবার ভাইয়ের ভালো মন্দের কথা বিচার করে তার বাড়ির দিকে রওনা দিলেন রাজ্য বিজেপির চাণক্য মুকুল রায় । তার প্রধান বক্তব্য ছিল, ” একজন দাদা হিসেবে ভাই এর ভালো মন্দ দেখা তার কর্তব্য” ।
মুকুল রায় আরও বলেন, “অন্য দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলা আমার উচিত নয় । কিন্তু সব্যসাচী আমার ভাইয়ের মতো । ওর সঙ্গে অন্যায় করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এভাবে কাউকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়না । সব্যসাচীকে সরিয়ে যেভাবে ডেপুটি মেয়রকে পুরসভা চালাতে বলা হচ্ছে, তা সংবিধান বিরোধী । কোন পদ থেকে কাউকে সরাতে গেলে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হয়।, সেই অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি করতে হয়” ।
তবে দুদিন আগে বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ ভবন এর কর্মচারীদের নিয়ে যে আন্দোলন প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সব্যসাচী দত্ত সেটা ছিল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন । সব্যসাচী অবশ্য নিজের সাফাই গাইতে গিয়ে বলেছেন, মমতা ব্যানার্জিও সরকারবিরোধী সিঙ্গুর আন্দোলনে নেমেছিলেন । তাহলে আমার বেলায় দোষ কেন ?”
ভাইয়ের তথা সব্যসাচীর সমর্থনে মুকুল রায় বলেন, “সব্যসাচী তো মমতা দেখানো পথে রাজনীতি করছিল । লোকসভা ভোটে উনি ত ওনার রাজারহাট বিধানসভায় তৃণমূলকে জিতেছেন । বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উনার পাড়ায় হেরেছেন । তাছাড়া তৃণমূলের 121 জন বিধায়ক যে নিজের নিজের এলাকা হেরেছেন তাদের অনেকেই লোকসভা ভোটে বিজেপিকে সাহায্য করেছেন । তাহলে সব্যসাচী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কেন ? ” এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী কে সমালোচনা করে সব্যসাচীর পাশে দাঁড়ালেন মুকুল রায় । পাশাপাশি ভাইকে নিজের দলে টানার জন্য তিনি যে হাত বাড়িয়ে আছেন সেটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন তিনি ।