বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: খ্যাতির শেষ আছে? যে যত উপরে ওঠে, তাঁর লক্ষ্য থাকে আরও উপরে পৌঁছাবার, এটাই মানব সভ্যতার নিয়ম। খ্যাতনামা সেলিব্রিটি, খেলোয়াড়, বড় পর্দার শিল্পী, আমি, আপনি কেউই এই নিয়মের বাইরে নয়। তবে তাই বলে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছানোর বাসনায় বহুমুল্যবান এই জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো ভুল করবেন কি কেউ? যদি কারোর তেমন ইচ্ছাও থাকে, বুঝতে হবে সে সত্যিই মানসিক ভাবে অসুস্থ।
সাধারণ ভাবে বড় পর্দার শিল্পীদের’কে দেখে আমরা ভাবি যে তাঁরা হয়তো আমাদের চেয়ে অনেক বেশী সুখী। কিন্তু আদতেও সকলেই কি সুখী? সম্প্রতি নিজের জীবনের গল্প দিয়েই তাঁর দৃষ্টান্ত গড়লেন ‘মীরাক্কেল’ উপস্থাপক মীর আফসার আলী।
জনপ্রিয় গল্প চ্যানেল ‘সানডে সাসপেন্স’ এর কথক মীর আফসার আলী সম্প্রতি নিজের জীবনের চতুর্থ আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন। খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছানোর পাগলামি তাঁকে পৃথিবীর মায়া ছাড়বার জন্য বাধ্য করছে, এমনটাই জানালেন মীর। একারণে একসাথে ৮৭টি ঘুমের ওষুধ একসাথে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন তিনি।
এরপর সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মীর বললেন, “গত দু’বছরে আমি চারবার সুইসাইড অ্যাটেম্পট করেছি। চারবারের মধ্যে তিনবার আমাকে আনোয়ার শাহ রোডের হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছিল। চারবারের মধ্যে একবার তো আমি নিজের বাড়িতে সুইসাইড অ্যাটেম্পট করতে গিয়েছিলাম।”
শেষবার ৮৭টি ঘুমের ওষুধ একসাথে খেয়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে মীর বলেন, “বাসায় যখন জানতে পারলো আমার এই অবস্থা। আমাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসি। সেইবার আমার মনে হয়েছিল আমি বোধহয় আর ফিরব না। তারপর কাউন্সেলিং হয়েছিল, ওষুধ খাওয়া শুরু হলো। আমাকে বাড়ির লোক আমেরিকা পাঠিয়ে দিয়েছিল ছুটিতে।”
যেকোনো বাঙালী গল্পপ্রেমীর কাছে আবেগের স্থানে রয়েছেন মীর। এহেন খ্যাতি ও ভালোবাসা পাওয়া স্বত্বেও কেন এমন পথ বেছে নিলেন মীর? উত্তরে তিনি বললেন, “সবকিছু রয়েছে আমার। আল্লাহ সবকিছু দিয়েছেন। আমি যা যা কিছু স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি সে সব কিছু আমার দখলে রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু একটার পেছনে ছুটতে থাকা, কিছু একটা তাগিদ, কোনো একটা জেদের বশে, করেছি এই কাজ।”
খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছানোর পাগলামিতে বারংবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেও, এরপর থেকে আর ওই পথে পা বাড়াতে চান না মীর। এই ধরণেরই অন্যান্য সকলকে তিনি উপদেশ দিলেন, “এরকম সুইসাইডের চিন্তা যদি কখনও মাথায় আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কাছের কোনো মানুষকে বলে ফেলুন। পাশে কেউ না থাকলে তাকে ফোন করে কথাটা বলুন। সেই মানুষটির সঙ্গেই কথা বলবেন যিনি আপনাকে অপমান করবেন না। যারা ডাক্তার বা মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছেন, তাদের পায়ে পড়ে বলছি, কিছু লুকোবেন না ডাক্তারের কাছে”