বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: বেশ বড়সড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মমতা সরকার । রাজ্যে বেআইনি টাকার লেনদেন, ড্রাগ ও অস্ত্র পাচার বন্ধ করার জন্য স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠন হচ্ছে রাজ্য পুলিশের সাহায্যে । লোকসভা ভোটের আগে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবারও বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী । বেআইনি টাকার লেনদেন, জাল নোটের কারবার, ড্রাগ পাচার, বেআইনি অস্ত্র মজুত, রাজ্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতে পুলিশের নতুন স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন । সোমবারই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
নবান্ন থেকে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাব ও বাহিনীর জন্য নতুন পদ তৈরি করার সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে সম্মতি দিয়েছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । স্পেশ্যাল টাস্ক বাহিনী গঠনের ফলে রাজ্য পুলিশের এডিজি প্ল্যানিং, আইজিপি বর্ডার, ডিআইজি সিআইডি (অপারেশন) ইত্যাদি পদের পরিবর্তন করা হচ্ছে ।
লোকসভা ভোটের পরে এবং পুজার আগে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ যে তাৎপর্যপূর্ণ সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই । নবান্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, এ ব্যাপারে গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে সরকারী আধিকারিকদের সাথে । এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সম্প্রতি ভবানী ভবনে সিআইডি দফতরেও একবার রাজ্য পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্তারা এ ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন । অবশেষে মমতা সরকার এই রকম একটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ।
নতুন এই টাস্ক ফোর্সের দায়িত্ব কে নেবেন সে কথা এখনও মুখ্যমন্ত্রী জানান নি । তবে রাজ্য পুলিশের উপর মহলে কিছু পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। এসটিএফ-এর শীর্ষ স্তরে অফিসার নিয়োগও শুরু হয়ে গিয়েছে। যেমন দার্জিলিংয়ের ইন্সপেক্টর জেনারেল অজয় কুমার নন্দকে এসটিএফের আইজি করা হয়েছে । আইপিএস অফিসার নিশান্ত পারভেজকে সিআইডি-র অপারেশন থেকে তুলে এনে এসটিএফের ডিআইজি করা হয়েছে । তা ছাড়া হাওড়ার ডিসি হেড কোয়ার্টার্স সুনীল কুমার যাদবকে এসটিএফের পুলিশ সুপার করা হয়েছে। এ ছাড়াও থাকবেন চার জন পুলিশ সুপার । চোদ্দ জন ডেপুটি পুলিশ সুপার এবং ২৫ জন ইন্সপেক্টর ও পঞ্চাশ জন সাব ইন্সপেক্টর । পাশাপাশি দেড়শ জন কনস্টেবলও থাকবে বাহিনীতে। সব মিলিয়ে বাহিনীতে থাকবেন ৩৮৪ জন ।
নবান্নের এক পদস্থ আমলার কথায়, সন্ত্রাস দমন, বেআইনি টাকার লেনদেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বা বেআইনি অস্ত্র মজুতের মতো অপরাধের ধরন ধারন এখন বদলে গিয়েছে । এ জন্য একটা স্পেশাল ফোর্স তৈরি করা সময়ের দাবি । তাঁর মতে, হতেই পারে এডিজি সিআইডি পদ থেকে সরিয়ে রাজীব কুমারকেই এসটিএসের চিফ করা হবে ।
তবে অনেকেই এর পিছনে রাজনৈতিক কারণও দেখছেন। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটের পর বাংলায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি যে ভাবে সক্রিয় হচ্ছে, তাতে শাসক দলের একটা উদ্বেগ তো রয়েছেই । তৃণমূলের ভয় আছে বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় জলের মতো টাকা খরচ করবে বিজেপি । এসটিএফ-এর একটা বড় কাজ যে বেআইনি টাকার লেনদেন আটকানো হবে সেটা বিজ্ঞপ্তিতেই লেখা রয়েছে । সুত রাং মমতা সরকার আগামী দিনে এই স্পেস্যাল টাস্ক ফোস তৈরি করে একই ঢিলে দুই পাখি মারতে চলেছেন এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না ।