বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: প্রকৃতির লীলা বোঝা বড়ো দায়। আর এর ফলে চিরকাল ভোগান্তি সহ্য করে চলেছে সাধারণ মানুষ; বিশেষ করে সমাজের গরীব, দুঃখী, দিন-মজুর দের কেই এর মাশুল দিতে হয় বেশীরভাগ সময়।
আবারও প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় নাজেহাল হতে হল ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের বাসিন্দাদেরকে। ভয়াবহ বন্যার কারণে প্রাণের ভয়ে ঘরছাড়া হতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যেই ২৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সময় মতো সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে না নিয়ে যেতে পারলে আরও বহু মানুষের প্রাণসংকট দেখা যাবে বলে আশঙ্কা।
সংবাদ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বন্যার জলে মহারাষ্ট্রের গোটা কোলাপুর শহর ১০ ফুট জলের নীচে চলে গেছে। মহারাষ্ট্রের যে পাঁচ জেলা বন্যার কবলে পড়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কোলাপুরের। এই স্থানের বিস্তীর্ণ এলাকা দুদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে, শহরের বাড়িঘরের ছাদটুকু ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এতটাই আশঙ্কাজনক যে, সড়কপথে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না বন্যাকবলিত একাধিক এলাকায়। একারণে কোলাপুরের ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রাখা হচ্ছে ত্রাণবহনকারী ট্রাকগুলোকে। কৃষ্ণা, পঞ্চগঙ্গা সহ মহারাষ্ট্রের একাধিক নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবারও মহারাষ্ট্রে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সেকারণে আরও বেশী চিন্তিত হয়ে পড়েছে প্রশাসন। উদ্ধারকার্যে নিয়োগ করা হয়েছে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সেনাদের। পাশাপাশি হাত লাগিয়েছে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। জানা গেছে, গত কয়েক দিনে মহারাষ্ট্রে বন্যার প্রভাবে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
একনাগাড়ে বৃষ্টির জেরে মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে যোগাযোগের ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক জলের তলায় চলে গেছে। এর ফলে শহর দুটির মেট্রো যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভয়াবহ বন্যায় ইতিমধ্যে ১,৪১০ কিলোমিটার রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে মহারাষ্ট্রে, ভেঙে পড়েছে প্রায় চার হাজারেরও বেশি বাড়িঘর। সূত্রানুযায়ী, মহারাষ্ট্রের দুই লাখ ৮৫ হাজারেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষকে এখনও পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।