বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চলতি বছরের বিগত ৫ই আগস্ট তারিখে ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা দুটি বাতিল ঘোষণা করার পর থেকেই সীমান্তবর্তী জম্মু ও কাশ্মীর দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েও যায়। কিন্তু ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে একেবারেই মেনে নিতে পারেনি প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যবর্তী একটি ঐতিহাসিক সমস্যা কাশ্মীর; তা স্বত্বেও পাকিস্তানের সাথে কোনপ্রকার আলোচনা ছাড়াই ভারত সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তান।
একারণে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বিরুদ্ধে বারংবার অভিযোগ করেও যখন কোনও ফল পাওয়া যায়নি, তখন ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হিংসা ছড়াতে উদ্যোগী হয়েছে পাক সরকার। ভারত সরকার অবশ্য আগে থেকেই সবটা বুঝেছিলেন, একারণে ৫ই আগস্ট থেকেই উপত্যকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কড়া নিরাপত্তা বন্দোবস্থের কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সেখানকার সকল সাধারণ মানুষকে। নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ৫ই আগস্ট থেকেই বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ জম্মু ও কাশ্মীর এলাকায়। এছাড়া, গোটা জম্মু-কাশ্মীর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিলো। একারণে খুবই ভোগান্তি হয়েছে উপত্যকাবাসী’দের। অবশ্য সম্প্রতি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, খুব শীঘ্রই উপত্যকার কড়া নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হবে।
নিরাপত্তা জারি হওয়ার বেশ কয়েক সপ্তাহ বাদেই চালু করে দেওয়া হয়েছিলো জম্মু-কাশ্মীর এর বহু বিদ্যালয়, কিন্তু সেখানে ছাত্রের অনুপস্থিতির কারণে তা বর্তমানে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। দফায় দফায় কারফিউয়ে উপত্যকার অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা বিদ্হাযালয়ে হাজির হতে পারছে না। একারণে কাশ্মীরের ছোট ছোট শিক্ষার্থী’দের কথা ভেবে রাজধানী শ্রীনগরের হজরতবালে নিজের বাড়িতে অন্তত শ’দুয়েক ছাত্রছাত্রীকে পড়ানো শুরু করেছেন মুনাজা ইমরান বাট।
উপত্যকায় এখনও ক্ষেপে ক্ষেপে যে সিংসা ছড়াচ্ছে, তার মধ্যে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো উচিত হবে কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না বাবা-মায়েরা। তবে এভাবে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া যাতে বন্ধ না-হয়, সেই দিকে নজর রাখছেন অভিভাবকেরা। একারণেই তারা মুনাজা’র শরণার্থী হন।
এপ্রসঙ্গে কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা আসিফা নামে এক নারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মাস থেকেই নিজের বাচ্চাদের বাড়িতে পড়াচ্ছেন তিনি। তার মতে, বিদ্যালয়ে না যাওয়ার ঘাটতি অনেকটাই সামলানো যাবে এতে। ওই গৃহবধূর বক্তব্য অনুযায়ী, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের জেরে হঠাৎ বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়টি বোঝানো যাচ্ছে না ছোটদের।