বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ এমনিতেই পাকিস্তান বরাবরের জন্য ভারতের বিরোধিতা করে । কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলুপ্তকরনের পর পাক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল সব থেকে বেশি । এবার ভারতের দুই প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের দুই প্রধান মন্ত্রী ইমরান-হাসিনার সাথে টেলিফনিক আলোচনায় উঠে এল কাশ্মীর প্রসঙ্গ । এদিকে চিন এবং নেপালের সাথে সম্পর্কের অবনতির পর বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে ধন্ধে রয়েছে নয়াদিল্লী ।
সম্প্রতি পাক প্রধান মন্ত্রী ইমরান খানের সাথে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথা হয়েছে । সেখানে আলোচনায় নাকি উঠে এসেছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে হাসিনার কাছে নিজের চিন্তার কথা নাকি জানিয়েছেন ইমরান। এই আলোচনার পিছনে চীনের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে । কারন ভারতের বন্ধু দেশ নেপালকে ইতিমধ্যে চিন নিজের দিকে টেনে নেওয়ায় ভারত বিরোধী সুর চড়াতে দেখা যাচ্ছে নেপালের পক্ষ থেকে । ফলে এই খবরে উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির।
ধারনা করা হচ্ছে, একদিকে পাকিস্তান এবং নেপালকে যেভাবে ভারত বিরোধী করতে পেরেছে চীন, সেখানে বাংলাদেশও যদি ভারতের বিপক্ষে চলে যায় তাহলে কূটনৈতিক স্তরে যথেষ্ট চাপের মুখে পড়তে পারে নয়াদিল্লী । কারন এই তিন দেশ ভারতের বিপক্ষে গেলে অনেকটাই সুবিধা হবে চিনের। পাকিস্তান ছাড়াও ইতিমধ্যেই চিন অনেকভাবে বাংলাদেশের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে, যাতে বাংলাদেশও ভারত বিরোধিতা শুরু করে। এই একই প্রভাব খাটিয়েই নেপালকে নিজেদের দলে টেনেছে চিন। ইমরানের এই ফোন করার পিছনেও চিনের প্রভাব থাকতে পারে বলে নয়াদিল্লি থেকে ধারণা করা হচ্ছে ।
নয়াদিল্লী সবচেয়ে বেশি ধন্ধে পড়েছে ফোনে কথা বলার পর বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সম্পূর্ণ আলাদা বিবৃতি জারি করায় । পাকিস্তান তাদের বিবৃতে জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে নিজের চিন্তা হাসিনাকে বলেছেন ইমরান। উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত। তিনি চান শান্তিপূর্ণ ভাবে এই সমস্যার সমাধান হোক। অন্যদিকে বাংলাদেশের বিবৃতিতে কাশ্মীর নিয়ে কোন প্রসঙ্গের কথা বলা হয়নি । সেখানে বিবৃতিতে বলা হয়েছে দু’দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ও বাংলাদেশের বন্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ।
তবে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। জম্মু-কাশ্মীর ও তার উন্নতি নিয়ে ঢাকার মনোভাব নয়াদিল্লি জানে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে।” তবে কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভারতের চিন্তা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ভারত ও চিনের মধ্যে এই সমস্যার সময়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে এই সম্পর্কের হঠাৎ পরিবর্তন নয়াদিল্লির পক্ষে উদ্বেগ বাড়াতেই পারে। আবার একাংশ মনে করছেন এই ব্যাপারে ভয় না পাওয়ার কথাই । দুই প্রধানমন্ত্রী তঁদের মধ্যে আলোচনায় যে কোনও বিষয় তুলতেই পারেন। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দুটিই মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। তাই তাঁদের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ আসতেই পারে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।