বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ প্রকাশ্যে এল সিনেমার বাইরে বলিউডের কাপুর খানদানের করিশ্মা কাপুরের ব্যাক্তিগত জীবনের কিছু অন্ধকারময় ঘটনা । প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুরের বিরুদ্ধে ভয়ানক অভিযোগ করে বসলেন এই তারকা অভিনেত্রী । বিবাহিত জীবনে মারধরের মত ঘটনা তো ছিলই, প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় হানিমুনের রাতেই জোর করেছিলেন  করিশ্মাকে তার এক বন্ধুর সাথে রাত কাটাবার জন্য ।

কারিশমা ১৯৭৪ সালের ২৫শে জুন মুম্বই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা অভিনেতা রণধীর কাপুর ও মাতা অভিনেত্রী ববিতা শিবদাসানি। তার ছোট বোন কারিনা কাপুরও একজন অভিনেত্রী। তার পিতামহ ছিলেন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ কাপুর, অন্যদিকে তার মাতামহ ছিলেন অভিনেতা হরি শিবদাসানি। তার প্র-পিতামহ ছিলেন অভিনেতা পৃথ্বীরাজ। অভিনেতা ঋষি কাপুর ও রাজীব কাপুর তার চাচা এবং অভিনেত্রী নীতু সিং ও উদ্যোক্তা রিতু নন্দা তার চাচী। তার কাকাতো ভাই অভিনেতা রণবীর কাপুর, আরমান জৈন ও আদর জৈন এবং ব্যবসায়ী নিখিল নন্দ। অভিনেতা শাম্মী কাপুর ও শশী কাপুর তার পিতামহের ভাই এবং অভিনেত্রী সাধনা শিবদাসানি তার মায়ের ফুফু। বাড়িতে তাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে “লোলো” নামে ডাকা হয়। কারিশমার মতে, “লোলো নামটি তার মায়ের পছন্দের ইতালীয় অভিনেত্রী জিনা লোল্লোব্রিজিদার নাম থেকে নেওয়া হয়েছে।

করিশ্মা কাপুর

করিশ্মা কাপুর ১৯৯১ সালে, সতের বছর বয়সে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটান ।পরবর্তীকালে তিনি বিভিন্ন বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, এর মধ্যে রয়েছে, জিগর (১৯৯২), আনাড়ি (১৯৯৩), রাজা বাবু (১৯৯৪), সুহাগ (১৯৯৪), কুলি ন. ১, গোপী কিষাণ (১৯৯৪), সাজান চালে শাশুড়াল (১৯৯৬) এবং জীত (১৯৯৬)। ১৯৯৬ সালে, করিশ্মা কাপুর তার সর্বাধিক বাণিজ্যিক সাফল্য রাজা হিন্দুস্তানী চলচ্চিত্রের জন্যে প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন, এবং পরবর্তীতে দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭) রোমান্টিক নাট্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি সমালোচকদের দ্বারা বহুল প্রশংসিত হন ফিজা (২০০০) চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে এবং জুবেইদা (২০০১) চলচ্চিত্রের জন্যে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। ফলে, কাপুর হিন্দি চলচ্চিত্রের একজন নেতৃস্থানীয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অথচ এই সফল অভিনেত্রীর জীবনের করুন ঘটনা সামনে এল এবার ।

করিশ্মা কাপুর

তাই এবার প্রশ্ন উঠছে,  বলিউড মানেই কি কেবল লাস্যের উৎসব? না কি,  ক্যামেরার চোখ ধাঁধানো আলো আর আভিজাত্যের আড়ালে অনেক সময়ই লুকিয়ে থাকে এমন অনেক বাস্তব যা সামনে এলে শিউরে ওঠা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না ! তা না হলে, করিশ্মা কাপুরের মত একজন তারকার জীবনের এমন কিছু তথ্য বাইরে এল, যা জানলে একটা কথা স্বীকার করতেই হয়, বলিউড নায়িকা হোন বা দিনমজুর, নারী বোধ হয় সব জায়গাতেই সমান ভাবে অত্যাচারিত।

২০০৩ সালে সঞ্জয় কাপুরের সাথে গাঁটছড়া বাঁধেন করিশ্মা কাপুর । কিন্তু বিয়ের পর থেকেই  রীতিমত মারধর করতেন তাকে সঞ্জয়। মিডিয়া আর লোকচক্ষুর আড়ালে সেসব কালশিটে দাগ লুকিয়ে রাখতে পুরু মেক আপ করতে হতো করিশ্মাকে। শুধু তাই নয়, বিয়ের পর থেকেই, এমনকি হানিমুনের সময়েও তার এক বন্ধুর সঙ্গে রাত যাপনের জন্য করিশ্মাকে জোর করেছিলেন সঞ্জয়! সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়েছিল যে ২০১৬-তেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাদের !

করিশ্মা কাপুর

করিশ্মার আইনজীবী ক্রান্তি জানান যে,  গর্ভাবস্থায় পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিকভাবে সঞ্জয় এবং তার পরিবার করিশ্মাকে অত্যাচার করেছে। যদিও এই অভিযোগের কিছুই মেনে নেয় নি সঞ্জয়ের পরিবার। তাদের কথায়, “কেবল টাকার লোভে সঞ্জয়কে বিয়ে করেছিলেন করিশ্মা।” অপর দিকে  করিশ্মার বাবা এবং একসময়ের দাপুটে অভিনেতা রণধীর কাপুর  সংবদমাধ্যমকে জানান, ”সঞ্জয় অতি নিচ ব্যক্তি। আমি চাইনি করিশ্মা ওকে বিয়ে করুক। ওদের বিয়ের পরেও সঞ্জয়ের সাথে অন্য মহিলাদের সম্পর্ক ছিল! আর আমরা কাপুর। গোটা ভারতবর্ষ জানে আমাদের সামর্থ। কাজেই সঞ্জয়ের কত টাকা তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না।” আপাতত বিবাহবিচ্ছেদের পরে পরিবারের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেছেন করিশ্মা। বোন করিনা কাপুর খান তার অন্যতম সাপোর্ট সিস্টেম। কিন্তু করিশ্মার জীবনের এই অন্ধকার আরো একবার ভারতীয় সমাজে নারীর অসহায়ত্ব প্রমাণ করে দিল।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.