বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ‘একে রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর’, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের অধিকাংশ রাজ্য উত্তপ্ত । বেশ কিছু জায়গায় পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন প্রশাসনের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে । এরই মধ্যে পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী ইমরান খান উত্তেজনা আরও একধাপ উস্কে দিয়ে জানালেন ভারতের এই নয়া নাগরিকত্ব আইন ভবিষ্যতে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিকে ঠেলে দেবে যুদ্ধের দিকে ।
ভারতের কোন বিপদে পাকিস্তান বেশ খোসমেজাজে থাকে এটা সবাই জানে । বরাবরই দেখা যায় ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেও উত্তেজনা আরও বাড়াবার জন্য মন্তব্য করে বসে তারা । এবারও তার ব্যতিক্রম হল না । পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতে সংখ্যালঘুদের ‘সঙ্কট’ নিয়ে নিজের হুশিয়ারি জানালেন । তিনি হুমকি দেন, এই নাগরিকত্ব আইনের জেরে শুধুমাত্র উদ্বাস্তু সমস্যা হবে না, পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিকে ঠেলে দেবে যুদ্ধের দিকে ৷
বিশ্বরাজনীতিতে পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কতখানি গ্রহণযোগ্য হবে সে নিয়ে সন্দেহ থেকে যায় । কারন কিছুদিন আগে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ ওঠে ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে । রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব সঙ্কটের জন্য দায়ী শাসকদল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের কার্যকলাপ। সেখানে হিন্দু ও খ্রিস্টানদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক বিশেষ মহিলাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ বলে উল্লেখ করা ছিল৷
পাক প্রধানমন্ত্রীর হুশিয়ারির জবাবে ভারত থেকেও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে । ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ইমরান খানের বক্তব্যের উত্তরে জানিয়ে দেন, পাক প্রধানমন্ত্রী যেন তাঁর নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থার কথা চিন্তা করেন । জেনেভায় চলছে বিশ্ব শরণার্থী সম্মেলন । সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । গতকাল সেই সম্মেলনে তিনি কাশ্মীর সমস্যা ও নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ তুলে আন্তজাতিক মঞ্চে তুলে ধরার চেষ্টা করেন যে, ভারতে কয়েক লক্ষ মুসলমান এখন বিপন্ন । তাদের নিয়ে ইমরান খান যে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন সে কথাও জানান । তাঁর আংশকা, যে কোনও দিন ভারত ছাড়তে হতে পারে লক্ষ লক্ষ মুসলিম শরণার্থীকে। পাশাপাশি শুনিয়ে রেখেছেন, এই ভারতীয় সংখ্যালঘুদের জায়গা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই পাকিস্তানের ৷
পাক প্রধান মন্ত্রীর বিবৃতির পরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ভারতের কূটনৈতিক মহলে । তীব্র প্রতিবাদ করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পাকিস্তান আবার ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন । তারা (পাকিস্তান) মিথ্যাচারিতা করছেন । পাশাপাশি বিদেশ মন্ত্রক থেকে বিবৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৭২ বছর ধরে পাকিস্তান কেমন করে সংখ্যালঘুদের তাড়িয়েছে আর তাদের একটা বড় অংশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষত ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশে) পাক সেনার অত্যাচারের কথা তুলে আনা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।