বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চলতি বছরের বিগত ৫ই সেপ্টেম্বর তারিখে ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা দুটি খারিজ করার কথা ঘোষণার পর থেকেই সীমান্তবর্তী জম্মু ও কাশ্মীর দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়। কিন্তু ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে একেবারেই মেনে নিতে পারেনি প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী একটি ঐতিহাসিক সমস্যা হল কাশ্মীর। তা স্বত্বেও, পকিস্তানের সাথে কোনপ্রকার আলোচনা ছাড়াই ভারত সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। এমনকি, নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। কিন্তু তাতেও বিশেষ কিছু সুবিধা না হওয়াই নিজেদেরকে কোণঠাসা বলে মনে করে পাকিস্তান।
আর কোনও উপায় না পেয়ে অবশেষে বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়’কে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। এই উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) পাক নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে এক জনসভায় হুঁশিয়ারি দেন ইমরান খান। উল্লেখ্য, এর আগেও বেশ কিছু টুইট বার্তায় সমগ্র বিশ্বকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, কিন্তু তাতেও নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে কিছুমাত্র পিছপা হয়নি ভারত সরকার।
হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে এই দিন জনসভায় ইমরান খান বললেন, “প্রথমত আমি ভারতকে বলতে চাই আপনাদের সেনারা কাশ্মীরে যে দমনাভিযান চালাচ্ছে তা চরমপন্থাকে উষ্কে দেবে। যেসব মানুষকে আপনাদের স্বৈরশ্বাসনের শিকার হতে হচ্ছে তারা যেকোনো উপায়ে এর বিরুদ্ধে লড়বে।”
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে উস্কে দিয়ে তিনি বললেন, “কাশ্মীরে ভারত যা করছে তা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো। শুধু কাশ্মীরের মানুষ নয় ভারতের অন্য অঞ্চলের এবং একইসঙ্গে গোটা বিশ্বের মুসলিমকে এর কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ভারতকে বলতে চাই যে, হাজার হাজার মানুষকে আটক করে আপনারা মানুষকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠবে। আর কেবল ভারতের মুসলমানরাই নয়, বিশ্বজুড়ে ১২৫ কোটি মুসলমান আছে। তারা সবাই এসব দেখছে।”
এরপর ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান বলেন, “আপনি যখন বলেন ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য তখন আপনি ভারতের ২২ কোটি মুসলিমকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দেন।”
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “গোটা বিশ্বের ১২৫ কোটি মুসলিম কাশ্মীরের যে পরিস্থিতি দেখছে তারাও চরমপন্থার দিকে যাবে। যদি গোটা বিশ্ব যদি নীরব দর্শকের মতো আচরণ করে তাহলে এসব মুসলিম বন্দুক কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হবে।”
ইতিপূর্বে উরি হামলা এবং পুলওয়ামা হামলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওপর পাক জঙ্গি দ্বারা অতর্কিতে হামলার কথা গোটা বিশ্ব জানে। এই দিনের বক্তৃতায় সেই দায় অস্বীকার করেন পাক প্রধানমন্ত্রী বললেন, “কাশ্মীরের ২০ বছর বয়সী যে ছেলেটা ভারতীয় সেনাবহনকারী গাড়িতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে সে তো তাদের সেনাদের কাছ থেকে অকথ্যভাবে নির্যাতিত হওয়ার কারণে। কিন্তু ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে। বর্বরতা যখন চরমে পৌঁছে যায় তখন মানুষ এ অপমানজনক জীবনের চাইতে মৃত্যুকে বেছে নেয়াটাই শ্রেয় মনে করে। তাই উঠতি বয়সী একটা তরুণ তার মতো করে ভারতের এমন দমনপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটা তাদের মনের ভেতরের ক্ষোভ। এতে কোনো ইন্ধনের প্রয়োজন হয়নি।”