বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ প্রায় দুই মাস ধরে প্রায় নাকের জলে চোখের জলে মধ্যবিত্তকে এক করে দিয়েছে পেঁয়াজ । পেঁয়াজের বাজারদর নাগালে এলেও আগামী দিনে কি আলুর দাম আবার সকলকে কাবু করে ফেলতে পারে ! আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য এবার আলু চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে । আর যোগানের থেকে চাহিদা বেশী হলে দাম তো বাড়বেই । এখনই আলু চাষিদের মধ্যে বেশ ভয় ঢুকে গেছে ।
উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে আলু বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম খাদ্যশস্য, এর আগে রয়েছে যথাক্রমে ভুট্টা, গম এবং চাল। তবে চলতি বছরে আবহাওয়ার যে ধরনের তারতম্য হচ্ছে, তার প্রভাব আলু চাষের উপর পড়তে পারে বলে শঙ্কা । কারন ইতিমধ্যেই আলুর পরিচিত রোগ “নাভিধ্বসা” পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ গোটা রাজ্যেই দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনিও জানিয়েছেন, এই ধরণের আবহাওয়ায় আলুতে নাভি ধ্বসা রোগের প্রভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন গোটা বিযষয়টি নিয়ে রীতিমত চিন্তিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। ইতিমধ্যেই এব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে ।
আলু চাষি ছাড়াও সাধারন মানুষ এখনই বাজারে আলু কিনতে গিয়ে টের পাচ্ছেন গত বছরের থেকে এই বছরের দামের পার্থক্য । আচমকাই হু হু করে আলুর দাম বাড়তে শুরু করায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে বর্ধমানের আলুর পাইকারী ব্যবসায়ী চন্দ্র বিজয় যাদব জানিয়েছেন, আলুর দাম বাড়ায় বাংলার প্রায় সমস্ত কোল্ড স্টোরেজ থেকেই পুরনো আলু বেরিয়ে যায়। পাশাপাশি নতুন আলুও বাজারে সময়মত না আসায় আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল ঠিকই। বর্তমানে স্থানীয় নতুন আলু বাজারে চলে আসায় সেই দাম বৃদ্ধি না হলেও এখনও খুচরো বাজারে নতুন আলু ২২ থেকে ২৪ টাকা প্রতি কেজি দরে কিনতে হচ্ছে সাধারণ মা্নুষকে।
রাজ্য সরকার আলুর নাভিধ্বসা রোগের জন্য যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে । গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে বেশী আলুর চাষ করা হয়েছে । এই বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে আলু চাষ বেশ কয়েকদিন দেরিতে শুরু করা হয়েছে । এবার সেই আবহাওয়ার কারনেই আলুর নাভি ধ্বসা রোগ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে আলুর ফলন মার খাবার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের শস্য রক্ষা গ্রুপের সদস্যরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোথায় কোথায় কি কি ধরণের ক্ষতি হতে পারে তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। একইসঙ্গে বাজারে প্রতিষেধক না পাবার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা তিনটি বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্য রাজ্যের কীটনাশক প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।