বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চলতি বছরের গত ৫ই আগস্ট তারিখে ভারতবর্ষের রাজ্যসভায় ভারত সরকার কতৃক স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতির কথা ঘোষণা করেছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই দিনের বিবৃতিতে ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি বাতিল করার কথা ঘোষণা হয়, এবং এর পরেই সীমান্তবর্তী জম্মু ও কাশ্মীর দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়।
এরপর থেকেই ভারতীয় প্রশাসনের তরফ থেকে কাশ্মীরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করে দেওয়া হয়। দীর্ঘকাল নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে থাকার ফলে বর্তমানে কাশ্মীরের পরিবেশ অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়ার পর কাশ্মীর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দিয়ে সেখানকার মানুষকে খুশী মনে বাঁচবার সুযোগ দেবে বলে কথা দিয়েছে ভারত সরকার।
চলতি বছর ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ সমর্থন পেয়ে পুনরায় দিল্লী’র সিংহাসন দখল করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টি-র মুখপাত্র নরেন্দ্র মোদী, এবং নিজের সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ করেছেন অমিত শাহ’কে। এই দু’জন বর্তমানে একের পর একে চমকে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। এপ্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি খারিজ করার পরপরই ভারতের অসম প্রদেশে নাগরিকপঞ্জী’র তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যা বর্তমানে সারা দেশে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
অসমের এন আর সি তালিকা থেকে সেখানকার প্রায় ১৯ লক্ষেরও বেশী মানুষের নাম বাদ পড়েছে, তা নিয়েই সমস্যা। এপ্রসঙ্গে সম্প্রতি অসম প্রদেশে পা রাখলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এন আর সি তালিকা নিয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অনুপ্রবেশকারী’দের কোনও জায়গা নেই দেশে। তবে তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষেরা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য দাবি করতে পারবে, আর সেখানে তারা নিজেদেরকে ভারতের নাগরিক হিসাবে প্রমাণ করতে পারলে আর কোনও অসুবিধা নেই।
ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর বর্তমানে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দারা। জম্মু-কাশ্মীর এর মতো উত্তর-পূর্ব ভারতেও বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে ৩৭১ ধারা’র মাধ্যমে। সেকারণে ভারত সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর অনেকেই অনুমান করছেন যে, এরপর সংবিধান থেকে ৩৭১ ধারাও বাতিল করে দেওয়া হবে। তবে সে বিষয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই দিন তিনি উত্তর-পূর্ব কাউন্সিল থেকে দাবি করে বলেন, কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা’য় কোন নিয়মাবলী লাগু ছিল না তবে উত্তর-পূর্ব ভারতে যে ৩৭১ ধারা লাগু আছে তাতে বিশেষ নিয়মাবলী রয়েছে।তাই এই দুটির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে বলে জানান তিনি।