বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ অনেক দিন টালবাহানা করার পর, অবশেষে মুখে হাসি ফুটতে চলেছে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের । কিছুদিন আগে নেতাজি ইনডোরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ষষ্ঠ পে কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করে নিয়েছে সরকার এবং সেটি মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হবে ২৩শে সেপ্টেম্বর। এবার সরকার কথা মতোই কাজ করে দেখাল । সোমবার দুপুরে নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পে কমিশনের সুপারিশ সরকারি ভাবে গ্রহণ করার পর আজ বিকেলে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।  তিনি জানান ১ লা জানুয়ারি ২০২০ থেকে নতুন বেতন কাঠামো চালু হচ্ছে । কতটা মাইনে বাড়বে তা উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি । অর্থমন্ত্রী বলেন, “ধরুন, কোনও রাজ্য সরকারি কর্মচারী এখন বেসিক ও গ্রেড পে মিলিয়ে একশ টাকা বেতন পান। তার সঙ্গে ১২৫ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা তথা DA  যোগ করলে হয় ২২৫ টাকা । ষষ্ঠ পে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পর তাকে ১৪.২ শতাংশ দিয়ে গুণ করা হবে। সেই সঙ্গে ২০১৬ থেকে তিন বছর ৩ শতাংশ হারে (নোশোনাল ইনক্রিমেন্ট) আরও বেতন বাড়বে। ফলে নতুন বেসিক হবে ২৮০ টাকা ৯০ পয়সা ।”

গ্র্যাচুইটি : 
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এর পর গ্র্যাচুইটির কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, বর্তমানে গ্র্যাচুইটির উর্ধ্বসীমা হল ৬ লক্ষ টাকা। বেতন কমিশন তা বাড়িয়ে দশ লক্ষ টাকা করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিয়েছেন গ্র্যাচুইটির উর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ১২ লক্ষ টাকা করা হোক। মন্ত্রিসভায় সেই প্রস্তাবই অনুমোদিত হয়েছে।

হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্সঃ 
এখন হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্সের উর্ধ্বসীমা হল ৬ হাজার টাকা। বেতন কমিশন তা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী তা ১২ হাজার করার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই প্রস্তাবই অনুমোদিত হয়েছে। অর্থাৎ হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্স দ্বিগুণ করা হল।

নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্সঃ 
অর্থমন্ত্রী জানান, ডাক্তাররা ব্যক্তিগত ভাবে চেম্বারে প্র্যাকটিস না করলে একটা ভাতা পান। বেতন কমিশন বলেছে তা বছরে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করা হোক। কিন্তু তা আরও বাড়িয়ে ২ লক্ষ ১১ হাজার টাকা করা হয়েছে ।

চিকিৎসা ভাতাঃ
রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা মাসে ৩০০ টাকা করে মেডিকেল ভাতা পান। সেটা পে কমিশন ৪০০ টাকা করতে বলেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তা আরও বাড়িয়ে মাসে পাঁচশ টাকা করতে বলেছেন। এ ছাড়া অন্য চিকিৎসার জন্য তাঁরা সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা করে পান। তা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।

এক্সট্রা ডিউটি অ্যালাওয়েন্সঃ
অমিত মিত্র বলেন, এটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন মাসে আড়াইশ টাকা করে দেওয়া হয়। তা বাড়িয়ে তিনশ টাকা করা হল।

টিফিন অ্যালাওয়েন্সঃ
বর্তমানে টিফিন অ্যালাওয়েন্স বাবদ কর্মচারীরা ঘন্টায় দশ টাকা পান। দিনে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা তাঁরা পেতে পারেন। পে কমিশন তা বাড়িয়ে দৈনিক ২০ টাকা ও দিনে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তা বাড়িয়ে ঘন্টায় ৩০ টাকা ও দিনে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা করতে বলেছেন।

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যের কোষাগারে ১০ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপবে। নতুন ROPA অর্থাৎ রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স এ সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা হয়ে যাবে। এ জন্য পুরো দমে কাজ চলছে।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.