এমন একটা সময় ছিলো যখন সিনেমাপ্রেমী’রা অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে থাকতেন সিনেমা রিলিজ হওয়ার আগে। রাজ্জাক, আলমগীর, শাবানা, ববিতা, একের পর এক নাম এসেই যাবে তবুও শেষ হবেনা নাম। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প মৃতপ্রায় হয়ে ধুঁকছে। দিনের পর দিন লোকসান করতে করতে হল মালিকেরা বন্ধ করে দিচ্ছেন তাদের প্রেক্ষাগৃহ’গুলি। এইতো কিছুদিন আগেও যেখানে ১২৩৫টি সিনেমা হল রমরমিয়ে চলেছে, বর্তমানে তার সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭৪। আজ ১৩ই মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি’র বৈঠকে সমিতি’র সভাপতি ইফতেকার উদ্দীন চৌধুরী নৌশাদ দলের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেন, আগামী ১২ই এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ রাখা হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহ’গুলি ব্যবসায় মার খাওয়ার যথেষ্ট কারন আছে।
প্রথমত, ভালো চিত্র নাট্যকার নেই। দেশীয় চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকগণ উন্নত মানের চলচ্চিত্র তৈরি করতে পারছেন না। বর্তমানে ভালো অভিনেতা ও অভিনেত্রীর অভাব আছে। এছাড়া, বাইরের দেশ থেকে ছবি আমদানি করে প্রেক্ষাগৃহ’গুলি সচল রাখার চেষ্টা একটা করা হলেও, চলচ্চিত্র শিল্পী ও কর্মীদের সক্রিয় বিরোধীতায় তা সম্ভব হয়নি। কারন হিসেবে তারা জানিয়েছে, প্রায় ৪০,০০০ শিল্পী ও কর্মী এই পেশার সাথে যুক্ত, বাইরের ছবি আমদানি হলে তাদের রুজি-রুটি’তে টান পড়বে।
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে সারা বছরে মাত্র ৩৫-৪০টি ছবি রিলিজ করলেও তা খুব ভালো মানের নয়। ছবি’গুলি দর্শক’দের প্রেক্ষাগৃহে ধরে রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যতদিন না এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হচ্ছে, ততদিন প্রেক্ষাগৃহ’গুলি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে।