ভাসমান শব্দটিই মনে হয় পানির উপর কোন ভাবে মাথা উঁচু করে আছে। আর সেখানে ভাসমান পেয়ারা বাজার। আমরা যারা এরকমই দৃশ্য দেখিনি তারা কল্পনাই করতে পারব না। ঝালকাঠি, বরিশাল এবং পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য পেয়ারা বাগান। আর এসব পেয়ারা বাগানের উৎপাদিত পেয়ারা ক্রয় বিক্রয়ের জন্য তৈরি হয়েছে ভাসমান পেয়ারা বাজার বা Floating Guava Market। ঝালকাঠী জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলিতে রয়েছে এই পেয়ারা বাজার। জুলাই, আগস্ট পেয়ার মূল মৌসুম হলেও এখানে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজার চলে। তবে ভাসমান বাজারের যৌবন অবস্থা থাকা আগস্ট মাসে। ভোর হতে না হতে পেয়ারা চাষীরা পেয়ারা নিয়ে হাজির হয়।
বরিশালের ভিমরুলি গ্রামের আঁকাবাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। পেয়ারাবোঝাই শত শত নৌকা। মজার বিষয়, এখানে আসা সব নৌকার আকার আর ডিজাইন প্রায় একই রকম। মনে হয় যেন একই কারিগরের তৈরি সব নৌকা। ভিমরুলির বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হলো দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এছাড়া স্বরূপকাঠীর আটঘর এবং কুড়িয়ানাতেও বসে এই ভাসমান হাট।
ভাসমান এ বাজারে যাওয়ার উপায় ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন রাত ৮টায় বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় অনেকগুলো বিলাসবহুল লঞ্চ। ঢাকার গাবতলী অথবা সায়দাবাদ থেকে বিভিন্ন পরিবহনের এসি বাস ও নন এসি বাসে বরিশাল যাওয়া যায়। এছাড়া বরিশালে এয়ারপোর্ট রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান সহ বেসরকারি বিমান চলাচল করে। বরিশাল থেকে বাস, মাইক্রো যোগে এসব বাজারে যাওয়া যায়।
আগে অনেক বাজারে ধানের পাতো (চারা) বিক্রি দেখা যেত নৌকায়। বিক্রেতা নৌকায় ধানের চারা এনে রাখতেন। হাটে (বাজারে) অল্প কিছু চারা নিয়ে দাঁড়াতেন। যখন ক্রেতার সাথে বিক্রেতার দরদাম ঠিক হত তখন ঐ নৌকার থেকে ক্রেতার নৌকায় অথবা বিক্রেতার নৌকাই ক্রেতার জমিতে পৌছে দিত।