আমাদের দৈনন্দিক জীবনের আমিষ খাদ্য তালিকার মধ্যে প্রথম সারিতেই অবস্থান করে মাছ এবং মুরগীর মাংস। তবে তাতেও যদি থাকে বিষ, তাহলে তো সাধারণ মানুষের পক্ষে খাদ্যগ্রহণ করে সুস্থভাবে বেঁচে থাকা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বর্তমানে এমন বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর খোঁজ মিলছে, যারা নিজেদের লাভের উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট-এর আদেশ অমান্য করে ট্যানারি’র বর্জ্য পদার্থ দিয়ে দিনের পর দিন মাছ এবং মুরগীর খাদ্য প্রস্তুত করে চলেছে। চিকিৎসক’দের বক্তব্য অনুযায়ী, ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মাছ এবং ব্রয়লার মুরগীর মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, এমনকি এতে শিশুরা জন্মগত বৈকল্যসহ আক্রমণ করতে পারে ক্যান্সারও।
ট্যানারি’র বর্জ্য পদার্থ দিয়ে মাছ ও মুরগীর খাদ্য প্রস্তুতিকরণের জন্য অন্যতম হল সাভারের হরিণধরা গ্রাম। এই স্থানে গেলে সর্বক্ষণ চারিদিকে বিপুল পরিমাণ ট্যানারি বর্জ্যের স্তূপ চোখে পড়বে। এপ্রসঙ্গে শ্রমিকদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বলে যে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা, তারা শুধুমাত্র নির্দেশ অনুযায়ী ময়লা এনে উক্ত স্থানে জমা করে।
শ্রমিকেরা বর্জ্য পদার্থ নির্দিষ্ট স্থানে জমা করবার পর সেগুলিকে প্রথমে দীর্ঘক্ষণ আগুনে পুড়িয়ে সেদ্ধ করা হয়। এরপর সেগুলি রোদে শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয় ব্রয়লার মুরগি এবং মাছের খাবার হিসেবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ট্যানারি বর্জ্যের মধ্যে যে ধরনের কেমিক্যাল দেওয়া থাকে সেগুলি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এপ্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেলের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এগুলো বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। বিভিন্ন সালফাইড দ্রবণ রয়েছে, যেগুলো মানুষকে মেরে ফেলবে তিলে তিলে। শুকানোর পর গুঁড়ো করা হয় সব বর্জ্য। এরপর বিভিন্ন অবৈধ কারখানায় সরবরাহ করা হয়। কয়েক দিন আগেই সাভারে এমন কয়েকটি কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।”