ভিআইপি দের সেবা দিতে গিয়ে যখন রাষ্ট্রের অন্যরা থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে তখন হাইকোর্টের এই রায় যুগান্তকারী। সচিব, উপসচিব, মন্ত্রী, এম.পিদের যদি কোন দিন কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে তাহলে প্রশাসনের সকলকে থাকতে হয় তটস্থ।
এই ভিআইপদের সেবা দিতে গিয়ে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। গত বুধবার যুগ্ন-সচিরে জন্য মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় মাঝ নদীতে হারিয়ে যায় একটি তরতাজা প্রাণ। পরবর্তীতে তিতাস ঘোষের মৃত্যুতে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেন ভিআইপি শুধু রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী, বাকিরা রাষ্ট্রের চাকর” একই সাথে অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিতাস ঘোষের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিতাস ঘোষের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন করেন মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহিরুদ্দিন লিমন। নৌসচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, যুগ্ম-সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসাইন মিয়া ও কাঁঠালবাড়ি থানার ওসিকে রিট আবেদনে বিবাদি করা হয়।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন।
উল্ল্যেখ্য মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া নড়াইলের কালিয়া পৌর এলাকার একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষকে (১১) নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফেরিতে ওঠে। সরকারের এটুআই প্রকল্পে দায়িত্বরত সবুর মণ্ডলের গাড়ির জন্য তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর রাত ১১টার দিকে ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা করে। তার আগেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যায় তিতাস। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএর কর্তাদের অনুরোধ করেও কোনো কাজ হয়নি। এমনকি সরকারি জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯-এ ফোন করা হলেও ফেরি দ্রুত ছাড়তে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।