মাসুমা এক অদম্য নারীর নাম। মাসুমা হারতে জানেন না । নাটোরের বাগতি পাড়ার আব্দুল মজিদের স্ত্রী মাসুমা। ১৯৯৭ সালে এস.এস.সি পরীক্ষার আগে বিয়ে দেন অভিভাবকরা । সাধারন ক্ষেত্রে প্রায় সময় দেখা যায়, মেয়েদের বিয়ের পরে সাংসারিক টানাপোড়নের মধ্যে লেখা পড়া আর হয়ে ওঠে না । কিন্তু, মাসুমা ব্যতিক্রমী । তাঁর স্বামী আব্দুল মজিদ, পেশাগত ভাবে আনসার ব্যাটেলিয়নের সিপাহী (প্রশিক্ষক)।
মাসুমার জীবনে এমন একটা সময় এসেছিল, তখন সংসারের চাপে লেখাপড়া ভুলতে বসেছিলেন। কিন্তু অদম্য মানসিকতার অধিকারিণী মেয়ে বড় হবার সাথে সাথে মেয়ের সাথে আবার শুরু করেন লেখাপড়া। হেরে যাওয়া নয়, জীবনটা জয়ের সেই মন্ত্রে ২০১৭ সালে মেয়ের সাথে এস.এস.সি পাশ করেন। এস.এস.সি হয়েছে তো কি হয়েছে, বসে থাকলে চলবে না।
ঘরের কাজের সাথে মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে এগিয়ে চলেন। মেয়েকে ভর্তি করেন রাজশাহি সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। নিজে ভর্তি হন স্থানীয় একটি কলেজের সাচিবিক বিভাগে। প্রত্যেকটি দিন ঘরের কাজ করে নিজের পড়া তার পাশাপাশি মেয়ের দিকে নজর রেখে এগিয়ে চলার নামই মাসুমা। মাসুমার শিক্ষা জীবনে তার স্বামীর অবদানও কম নয়, তিনি চান তার স্ত্রী যতদূর লেখাপড়া করতে চায় করতে পারেন।
মাসুমার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বর্তমান বৎসরে জি.পি.এ ৪.১৩ পেয়ে সাফল্যের সাথে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জিপিএ-৫। মা-মেয়ের এরকম সাফল্যে প্রতিবেশীসহ কলেজের সহপাঠীরা অভিনন্দন জানিয়েন।