গত ১৭ আগস্ট শনিবার রাত ১:৫০ নাগাদ শেক্সপিয়ার সরণি ও লাউডন স্ট্রীটের ক্রসিং জাগুয়ার দূর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশী নিহত হয়। এ গাড়ি দূর্ঘটনা নিয়ে তদন্তে নাটকীয় মোড় এসেছে। আজ বুধবার পুলিশের দাবি আরসালান পারভেজ নয় দূর্ঘটনায়র সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার দাদা রাঘিব পারভেজ। বড় ভাইকে বাচাতে  দুর্ঘটনার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ভাই আরসালান। এ দিন দুপুরে রাঘিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন বলেও পুলিশের দাবি।

লালবাজারে সাংবাদিক সাথে পুলিশের বৈঠকে পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার রাতে ঘাতক জাগুয়ারের স্টিয়ারিং ছিল আরসালানের দাদা রাঘিব পারভেজের হাতে। বড় ছেলেকে বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করানো হয় ছোট ছেলেকে। আরসালানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শুরু থেকেই সন্দিহান ছিলেন গোয়েন্দারা। দুর্ঘটনার সময় গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে গিয়েছিল। তাতে চালকের আঘাত পাওয়ার কথা। কিন্তু আরসালানের শরীরে কোনও রকম আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তাতে আরও সন্দেহ জাগে গোয়েন্দাদের। এর পরই দুর্ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। খতিয়ে দেখা হয় আশেপাশের দোকান এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রায় ৪৫টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। সৈয়দ আমির আলি অ্যাভেনিউয়ে আরসালানের বাড়ির সামনের সিসিটিভি ফুটেজও জোগাড় করা হয়। তাতেই প্রথম সূত্র হাতে পেয়ে যান গোয়েন্দারা। ওই ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাত ১১টার কাছাকাছি সময়ে ওই বাড়ি থেকে এক যুবক বেরোচ্ছেন।

একই সাথে জাগুয়ারের ঘাতক জাগুয়ারের ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার (ইডিআর) থেকে জানা যায় অত্যাধুনিক ওই গাড়িটি চালু করতে গেলে কিছু তথ্যের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে পারভেজ পরিবারের একাধিক সদস্যের মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। যে মোবাইল ছাড়া ওই গাড়িটি চালু করা সম্ভব নয়। ইডিআর থেকেই পুলিশ জানতে পারে শেষ বার গাড়িটি চালু করার সময় কোন মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছিল। জানা যায়, ওই নম্বরটি রাঘিব পারভেজের। তিনি আরসালানের দাদা অর্থাৎ আখতার পারভেজের বড় ছেলে। ওই মোবাইল নম্বরের  হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি দেখে পুলিশ চমকে যায়। ওই ছবি মিলে যায় আখতার পারভেজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা এবং ওই রাতে শেকসপিয়র সরণি ধরে হেঁটে-দৌড়ে যাওয়া যুবকের সঙ্গে।

পুলিশে তদন্তে বেরিয়ে আসে দুর্ঘটনার সময় জাগুয়ারটি ‘রেসিং মোড’-এ ছিল। সে-রাতে গাড়িটি কোথায় কোথায় গিয়েছিল এবং কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল, সিসি ক্যামেরা থেকে তার ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। সেই ফুটেজের সঙ্গে জাগুয়ারের ইডিআরের তথ্য মিলিয়েই দুর্ঘটনার নির্দিষ্ট কারণ জানার চেষ্টা করবে তারা। সোমবার রাতে পুলিশ থ্রি-ডি ভিডিয়োর মাধ্যমে ওই দুর্ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে। এই প্রথম কলকাতায় কোনও পথ-দুর্ঘটনার পুনর্নির্মাণের কাজে থ্রি-ডি স্ক্যানার ব্যবহার করল পুলিশ। শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ লাউডন স্ট্রিটের মোড়ে বেপরোয়া গতিতে জাগুয়ার চালিয়ে একটি মার্সিডিড বেন্‌জ়কে ধাক্কা মারেন কলকাতার একটি নামী রেস্তরাঁ সংস্থার মালিকের ছেলে আরসালান। ওই মার্সিডিজ ধাক্কা মারে একটি পুলিশ কিয়স্কে। বৃষ্টিতে সেখানে আশ্রয় নেওয়া দুই বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয় সেই ধাক্কায়।

Mr. Shuva is a News and Content Writer at BongDunia. He has worked with various news agencies all over the world and currently, he is having an important role in our content writing team.

Leave A Reply