বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সারা দেশ যখন হায়দ্রাবাদ ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে উত্তাল, যখন তাঁর বিচার চেয়ে সারা দেশ বিনিদ্র রজনী যাপন করছে, তখনই ভগবানের দূতের মত আবির্ভূত হয়ে চার ধর্ষককে চরম শাস্তি মানে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলেন এই সিঙ্ঘম আইপিএস অফিসার তথা সাইবারাবাদ এর পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জানার স্বয়ং।
ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ এবং এর সাজা একমাত্র হওয়া উচিৎ মৃত্যুদণ্ড। ভারতে ২০১২ সালে ঘটা নির্ভয়ার ঘটনা সারা দেশকে প্রচণ্ড অভিঘাতের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। এর আগেও যে দেশে এরকম জঘন্য অপরাধ ঘটেনি তা নয়। একাধিকবার ঘটেছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রে অপরাধিরা হয়ত শাস্তি পেয়েছে আবার কোনও ক্ষেত্রে অপরাধিরা শাস্তি ঠিক মত পায়নি। দেশের আইন এবং বিচারব্যাবস্থার প্রতি আস্থা রেখেও দিনের পর দিন বিনা বিচারে মুক্তি পেয়ে গেছে অপরাধীরা। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশের রক্ষকরাই ভক্ষকে পরিণত হয়েছে। এরফলে মানুষের পুলিশ প্রশাসনের ওপরও বিশ্বাস ধীরে ধীরে তলানিতে গিয়ে ঠেকছিল। কিন্তু সমস্ত রক্ষকরাই যে ভক্ষক নয় কিংবা পুলিশ প্রশাসনের অপরেও যে আস্থা রাখা যায় তা আবারও প্রমাণ করলেন এই জাঁহাবাজ পুলিশ অফিসার সাইবারাবাদ এর পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জানার স্বয়ং।
তাঁর সম্পর্কে বলতে গেলে কিছুটা পেছনে যেতে হয়। সালটা হল ২০০৮। ওয়ারাঙ্গালে দুই ইঞ্জিনিয়ার ছাত্রীর ওপর অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্ত তিনজনের এনকাউনটার করেছিলেন এই দাবাং পুলিশ অফিসার। ২০০৮ সালে তখনকার অন্ধ্রপ্রদেশ বর্তমান তেলেঙ্গানার ভিসি ছিলেন পুলিশ অফিসার সাজ্জানার। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে দুই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর ওপর অ্যাসিড হামলা করে তিনজন দুষ্কৃতী। আর এই কেসের দায়িত্বে থাকা এই দাবাং পুলিশ অফিসার এনকাউনটারে খতম করেন সেই তিনজনকে। শান্তি পায় আক্রান্তের পরিবার।
ঠিক এবারও হায়দ্রাবাদ রেপের ঘটনার দায়িত্বে ছিলেন এই পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জানার স্বয়ং। তখন থেকেই সবার মনে কথাও হয়ত একটু বিশ্বাস জন্মেছিল যে এই কেসের খুব তাড়াতাড়ি সন্তোষজনক নিষ্পত্তি হবে। আর হলও তাই দেশ এবং আইন যখন ভাবছে কি করা হবে এই ঘৃণ্য পশুদের থেকেও অধম জীবদের নিয়ে তখনই শুক্রবার ভোর রাতে এনকাউনটারে মারা গেলো এই তিনজন দুষ্কৃতী। ঘটনাটা সিনেমার কায়দায় হলেও সমস্ত দেশ আজ সকাল থেকে একটু যেন শান্তি পেয়েছে। যদিও অনেকে মনে করছে যে ঘটনাটা একেবারে সাজানো এবং ইচ্ছাকৃত। তবে যাই হোক এই মুহূর্তে এই জাঁহাবাজ পুলিশ অফিসার দেশবাসীর কাছে হয়ে উঠেছে ভগবানের দূত। আইন এবং আদালত যে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি তা এই অফিসারই করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
এই দাবাং অফিসারের কথা আরও বলতে গেলে বলতে হয়, ১৯৯৫ এর ব্যাচের আইপিএস হলেন এই অফিসার। বর্তমানে তেলেঙ্গানার বাসিন্দা হলেও এনার আদি বাসস্থান কর্ণাটকে। ১৯৯৬ সালে আইপিএস হবার পর তাঁকে অভিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলেঙ্গানা হলে তাঁকে তেলেঙ্গানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এমনই দাবাং পুলিশ অফিসার প্রয়োজন দেশে। দেশবাসীর সুরক্ষার ভার যাদের ওপর আছে তাঁরা যদি এমন করেই তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন তবে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা যেমন কমবে তেমনই সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি পাবে।