বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ রেল বেসরকারিসকরণের ঘোষণা আগেই করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।ফলে যে কেউ দেশের মধ্যে ট্রেন চালাতে পারেন । তবে বেসরকারিভাবে ট্রেন চালাতে হলে আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু নির্দেশিকা । রেলমন্ত্রক থেকে জানিয়ে দেওয়া হল সেই নির্দেশিকা ।
কেন্দ্রীয় সরকার রেলকে বেসরকারীকরণ করার কথা ঘোষণা করার পর মোট ২৩টি বেসরকারি কোম্পানি দেশে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল । তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিমেন্স ইন্ডিয়া লিমিটেড, বম্বার্ডিয়ান ট্রান্সপোর্টেশন ইন্ডিয়ার মতো কোম্পানির নাম রয়েছে। তবে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম । বুধবার বেসরকারি ট্রেন চালানোর খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে রেলমন্ত্রক । বুধবারই প্রকাশিত হয়েছে ওই খসড়া প্রস্তাব।
দেশের মধ্যে বেসরকারিভাবে ট্রেন চালাতে হলে রেল মন্ত্রক যে খসড়া প্রকাশ করেছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও বেসরকারি ট্রেন দেরিতে চললে বা সময়ের আগে পৌঁছলেও কোম্পানিগুলি তার জন্য রেলকে ভারী অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেবে এবং এই আর্থিক ক্ষতিপূরণের ধাক্কা সামলাতে কোম্পানিগুলিকে বছরভর ৯৫ শতাংশ সময়ানুবর্তিতা সব সময় বজায় রাখতে হবে। ট্রেন চালিয়ে আয়ের মিথ্যা রিপোর্ট দিলে বা তাদের কারণে কোনও ট্রেন বাতিল হলেও ভারী অঙ্কের ক্ষতিপূরণ তাদের দিতে হবে রেলকে। কোনও ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ের থেকে ১৫ মিনিট দেরিতে পৌঁছলেই সেটা দেরি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলিকে প্রতি এক শতাংশে ২০০ কিলোমিটারের অতিরিক্ত মালবহনের মাসুল বা ‘হলেজ চার্জ’ দিতে হবে রেলকে।
অন্য দিকে সময়ের আগে ট্রেন পৌঁছালেও সমস্যা আছে । ট্রেন সময়ের ১০ মিনিট আগে পৌঁছলে কোম্পানিগুলিকে ১০ কিলোমিটারের অতিরিক্ত ‘হলেজ চার্জ’ গুণতে হবে রেলকে। বেসরকারি ট্রেনের মাসুল প্রতি কিলোমিটারে ৫১২.১৩ টাকা। এই টাকা কোম্পানিগুলিকে দিতে হবে রেলকে কারণ তারা রেলের পরিকাঠামো ব্যবহার করছে।পাশাপাশি কোন কারনে যদি কোন কম্পানি ট্রেন বাতিল করে তাহলে রেলকে ‘হলেজ চার্জ’-এর এক-চতুর্থাংশ দেবে সেই কোম্পানি। আবার রেলের জন্য কোনও বেসরকারি ট্রেন বাতিল হলে রেল সেই কোম্পানিকে সেই একই অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেবে। তবে দুর্ঘটনা, খারাপ আবহাওয়া, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়া, লেভেল ক্রসিং-এ যানজটের মতো ঘটনায় কোনও পক্ষই কাউকে কোনও ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয়।
খসড়া প্রস্তাবে রেল মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, বেসরকারি ক্ষেত্রে ট্রেন চালানর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার বেগে ও বেশি শব্দ ও ঝাঁকুনিহীনভাবে চলার ক্ষমতাসম্পন্ন হতে হবে ট্রেনগুলিকে।থাকতে হবে এমার্জেন্সি ব্রেকিং সিস্টেম।প্রতিটি ট্রেনে থাকতে হবে স্লাইডিং দরজা-জানলা, ব্যবহার করতে হবে শক্তপোক্ত কাঁচ। সুরক্ষার স্বার্থে থাকতে হবে এমার্জেন্সি টক-ব্যাকের ব্যবস্থা। প্রতিটি কোচে অন্তত ৪টি অটোম্যাটিক দরজা থাকতে হবে। দরজার ক্ষেত্রে মেট্রো রেলের মতো সেন্সরিং থাকবে। অর্থাত্ সব দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলতে শুরু করবে না। প্রতিটি কামরার ভিতরে ও বাইরে থাকবে ডিসপ্লে বোর্ড। তাতে পরবর্তী স্টেশন ও অন্যান্য তথ্য স্পষ্টভাবে লেখা থাকতে হবে।প্রতিটি কোচে অন্তত ৬টি এমন সিসিটিভি ক্যামেরা হবে।