সময়ের সাথে হাত মিলিয়ে

দিনের পর দিন নাবালিকাকে লাগাতার ধর্ষণ – অভিযোগ পেয়ে গ্রেফতার গৃহশিক্ষক

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড । আর এই মেরুদণ্ডকে সবল  করার দায়িত্ব থাকে শিক্ষকদের উপর । কথায় বলে ভালো বাবা-মা এবং উপযুক্ত শিক্ষক একটি জাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি । অথচ সেই শিক্ষক আজ  ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ।

এমনই ঘটনা ঘটেছে বাঁশদ্রোণী  এলাকার রানী কুঠির এর এক দামী  ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে ।  কলকাতা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী জানিয়েছে,  গত এক বছর ধরে অভিযুক্ত  গৃহ শিক্ষক  দুটি কার্তুজ তার  সামনে রেখে   বাবা মা সহ তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে ।  ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ নেতাজি নগর এর বাড়ি থেকে 49 বছর বয়সী গৃহশিক্ষক রাজিব চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে ।

ঘটনার সূত্রপাত বছর দুয়েক আগে । নেতাজি নগর এর বাসিন্দা রাজীব চক্রবর্তীর কাছে টিউশন পড়তে শুরু করে ওই ছাত্রী । তদন্ত করার পর পুলিশ জানতে পেরেছে,  ছাত্রীর বাবা মা চাকরির জন্য যখন বাড়ির বাইরে থাকেন,  তখন সেই সময়টাই অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষক বেছে নিয়েছিল টিউশন করার জন্য । প্রথম থেকেই নানা অছিলায় ছাত্রীর গায়ে হাত দিত সে । তাছাড়া মাঝেমধ্যে নিজের নেতাজি নগরে বাড়িতেও ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে ।

বেশ কিছুদিন ধরেই ওই ছাত্রী বাড়িতে মন মরা উদাসীন ছিল ।  পাশাপাশি তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে ।  বিষয়টি তার বাবা-মার নজরে আসে । এরপর ছাত্রীর মা তাকে চেপে ধরতেই,  সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে । মেয়ের   মুখে সমস্ত কথা শুনে তার বাবা-মা থানায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । এরপর সোমবার  রাতে স্থানীয় বাঁশদ্রোণী  থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয় । পুলিশ নেতাজীনগরে অভিযুক্ত   গৃহ শিক্ষকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে  2 রাউন্ড কার্তুজ বায়জাপ্ত করে ।    এই কার্তুজ  উদ্ধারের ঘটনায় নেতাজি নগর থানায় অস্ত্র আইনে আলাদা একটি পৃথক মামলা করা হয়েছে ।

প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশ জানতে পেরেছে,  বিএসসি পাশ করা উক্ত  গৃহশিক্ষকের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে । তার ছেলে বর্তমানে জার্মানিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে ।  নেতাজি নগর এর বাড়িতে কোচিং সেন্টার চালানোর পাশাপাশি রুবির  কাছে একটি কোচিং সেন্টারে গিয়ে  পড়ায় সে । অন্য কোন  ছাত্রীর সাথে এমন অপরাধ করেছে কিনা অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষক,  সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।

এদিকে ধৃত  গৃহশিক্ষককে মঙ্গলবার  আদালতে তোলা হলে,  এই ঘটনার প্রতিবাদে আদালতের কোন আইনজীবী তার হয়ে মামলা লড়তে অস্বীকার করেন । আদালত তাকে 17 ই জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে । এছাড়া আদালতে এ দিন অভিযোগকারীর গোপন জবানবন্দির আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে । পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে,  যত দ্রুত সম্ভব তারা চার্জশিট পেশ করবে ।

মন্তব্য
Loading...