মানুষের মানবিকতা বিসর্জিত হলে কতটা নৃশংস হতে পারে একজন মানুষ তার চাক্ষুষ প্রমাণ মিলল কুমিল্লায় । একই পরিবারের মা এবং ছেলে সহ মোট চারজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হলো প্রকাশ্য দিবালোকে । ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাধানগর গ্রামে । এলোপাথাড়ি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে রাধানগর গ্রামের শাহ আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) এবং তার পুত্র আবু হানিফ (১২) একই গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার (৩৬০ এবং তার মা মাজেদা বেগম(৫৫) ।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ওই একই গ্রামের অধিবাসী মোখলেছুর নামে এক ব্যক্তি, যিনি পেশায় রিকশাচালক, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে চারজনকে হত্যা করে । প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে পেশায় রিকশাচালক হলেও মোখলেসুর মাদকাসক্ত ছিল । এর আগেও এলাকায় বেশ কিছু কুকর্ম করেছে সে । তার নামে থানায় বেশ কিছু মামলাও রয়েছে ।
এই দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নেশাতুর হয়ে মোখলেছুর বাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বের হয় । এরপর ওই গ্রামে চাষের খেতে কর্মরত আবু হানিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে । আবু হানিফকে আহত হতে দেখে তার মা শাহ আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম এগিয়ে আসে । তখন মোখলেছুর তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে । আস্তে আস্তে ভিড় জমে যায় । তখন মোখলেছুর যাকে সামনে পায় তাকেই কোপাতে থাকে । তার আক্রমণের মুখে পড়ে যায় নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার এবং তার মা মাজেদা বেগম । ঘটনাস্থলে চারজনের মৃত্যু হয় । এছাড়া একজন স্কুল ছাত্র এবং দুইজন মহিলা মোখলেছুরের আক্রমণের শিকার হন । তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে জনতা বিহ্বল হয়ে পড়লেও পরে একসাথে গণপিটুনি শুরু করে গণপিটুনির ফলে মোখলেছুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি জহিরুল আনোয়ার জানান, মোখলেছুর পেশায় রিকশাচালক । দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করতে করতে সে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে । তার বিরুদ্ধে একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে । কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “মোখলেসুর কে নিয়ে স্থানীয়রা ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করছেন । আমরা ঘটনাস্থলে আছি । কেন বা কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সেটা বের করার চেষ্টা করছি ।”