অনিয়ম–দুর্নীতি খুঁজতে গিয়ে চট্টগ্রাম কারাগারের কর্মরত কর্মকর্তাদের টাকা আয়ের নানা অভিযোগ ধরা পড়ছে। অক্টোবরে ঘুষের ৪৭ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হয় ওই কারাগারের জেলার সোহেল রানা। দুর্নীতির ঘটনা জানাজানির পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটির মাধ্যমে শুরু হয় সরকারি তদন্ত। একই সঙ্গে দুদক থেকেও পৃথক অনুসন্ধান শুরু হয়। ৯ মাসের যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্তে অন্তত ৫০ জন কারা কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারপর থেকে এসব কর্মকর্তা–কর্মচারী দুদকের নজরদারিতে রয়েছেন। ঘুষ–দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে পার্থ গোপাল বণিককে সোমবার বিকালে ঢাকার আদালতে পাঠানো হলে জামিন না দিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
গোপাল বণিক টাকার অনুসন্ধান করতে দুদকের চার সদস্যের টিম কাজ করে রোববার বিকাল ৫টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সারারাত তারা নির্ঘুম কাটান পার্থ গোপাল বণিকের বাসায়। পার্থর স্ত্রীও জানতেন না ঘরে কত টাকা আছে। জানা যায় অবৈধ অর্থর পাশের ছাদেও ফেলে দেয়।
সোমবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দুদকের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও আলামত (৩০ লাখ টাকা) গায়েব করার চেষ্টার অভিযোগে পার্থ বণিকের স্ত্রীকেও আসামি করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি গর্ভবতী হওয়ায় মানবিক কারণে তাকে আসামি করা হয়নি।
মামলার জামিন শুনানির সময় পার্থর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, তার মক্কেলের বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ২০১৮–১৯ সালের আয়কর বর্ষে তিনি হাতে নগদ ৪০ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬ টাকা আছে মর্মে আয়কর ফাইলে দেখিয়েছেন। আর তার মা ও শাশুড়ির এফডিআর ভাঙিয়ে বাকি টাকা তার বাসায় রাখা হয়েছিল একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য। তিনি এক লাখ ৯ হাজার টাকার ওপর ইনকাম ট্যাক্স দিয়েছেন।
বিশ্বস্ত জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপল বণিক ছাড়াও অন্তত ৪৯ কর্মকর্তার স্থাবর–অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। এই তালিকায় সাবেক এক আইজি (প্রিজন), বরখাস্ত হওয়া চট্টগ্রামের সাবেক জেলার সোহেল রানা, চট্টগ্রামের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার (বর্তমানে বরিশাল) প্রশান্ত কুমার বণিকসহ ৫০ কর্মকর্তা–কর্মচারীর নাম রয়েছে।