‘স্বামীর রূপ আর যশ দুটোই থাকবে’, এটা মনে মনে কোন মেয়েই না চায়। আর সেজন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনাও করা হয়। তবে সম্প্রতি এক্ষেত্রে বিরল নজির রাখলেন চিনের মহিলারা। তাঁরা অর্থবান, বিত্তশালী স্বামী পেতে অদ্ভুত একটি প্রতিযোগিতায় মেতেছেন। প্রতিযোগিতার নামটিও বেশ বিচিত্র – ‘ম্যারেজ টু এ মাল্টিমিলিওনেয়ার’, শুধু মিলিওনেয়ার হলেও বা একরকম হতো, এ তো পুরো বিজ্ঞাপন দিয়ে মাল্টি মিলিওনেয়ারকে পাকড়াও করা। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রতিযোগীর কোটিপতি স্বামী পাওয়া আটকায় সাধ্যি কার।

এর মূলত তিনটি পর্ব, নাম লিখিয়েছে মোট এক হাজার জনেরও বেশী। তাদের মধ্য থেকে নির্বাচন করে দ্বিতীয় রাউন্ডে কতজনকে নেওয়া হবে জানেন? মোট ৫০ জনকে। ৫০ জনের জন্য নাম লিখিয়েছে হাজারেরও বেশী। এই এক হাজার জন এখন নানাভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের গ্রুম করছে। এই প্রতিযোগিতার ফরম্যাট ঘোষণা করার পরে পরেই আরও তরুণী এতে নাম লেখাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এমনিতেই প্রতিযোগীদের সংখ্যা এতো বেড়ে যাওয়ায় রেজিস্ট্রেশন লক করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বেশ কয়েকটি মাপকাঠিকে নেওয়া হয়েছে, অবশ্য শারীরিক সৌন্দর্যই এক্ষেত্রে যে মূল কথা সেটা আর আলাদা করে বলে না দিলেও চলে। সঙ্গে তাদের শিক্ষা, রুচি, পরিবারের আর্থিক অবস্থা এবং অবশ্যই জ্যোতিষ বিচারে (রাশি অনুযায়ী) বাছা হচ্ছে। সঙ্গে অবশ্য তাদের আইকিউ লেভেলও পরীক্ষা করা হবে।

এই প্রতিযোগিতার জন্য চিনে অন্ততপক্ষে ১৬ মিলিয়ন ডলারের মালিক এরকম ৩২ জন তরুণকে বাছা হয়েছে। অবশ্যই তাদের সম্মতিক্রমে। দ্বিতীয় পর্বে যে ৫০ জন উঠবেন তারা ওই ৩২ জন তরুণের সঙ্গে দেখা করার ও সামনাসামনি কথা বলার সুযোগ পাবেন। ইচ্ছে করেই পাত্রীর সংখ্যাটা বেশী রাখা হয়েছে, কেননা বাতিল করার সুযোগ পাবেন পাত্ররা।

চিনে বিয়ে নিয়ে এহেন মাতামাতিকে অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না। তাদের বক্তব্য, এসব করলে সমাজ রসাতলে যাবে। আবার বেশ কয়েকজন ম্যাচমেকারের বক্তব্য, এখানকার সমাজে এরকম প্রতিযোগিতা নিঃসন্দেহে একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। এখন জীবনের সবকিছুতেই প্রতিযোগিতা, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, বিয়েও তার ব্যতিক্রম নয়, কে ভালো পাত্র নির্বাচন করতে পারবে। আর সেটা যদি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হয় ক্ষতি কি? বিশেষজ্ঞ গবেষকদের মধ্যে, চিনে গত একদশকে সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে আর সেজন্যই সেখানকার তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিয়ের জন্য বেশ ভালরকমের সাড়া মিলছে।

এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সকলেই স্বেচ্ছায় এসেছেন। কেউ কেউ তো বিত্তশালী জীবনসঙ্গী পেতে ৩০-৩৫ হাজার ডলার খরচ করছেন নিজেকে গ্রুমিং করার জন্য। ভাবা যায়, দুনিয়া কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে! এই প্রতিযোগিতার আয়োজন চায়না এন্টারপ্রেনার ক্লাব, এখানে নাম লেখানোর প্রাথমিক ফি ৩১০০০ ডলার। এর বেশ কিছু শর্তও আছে – এখানে যেসব অবিবাহিত তরুণী অংশ নেবে তাদের বয়স হতে হবে ২০-২৮ এর মধ্যে, উচ্চতা অন্ততপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি বা তার বেশী হতে হবে। প্রতিযোগিতার অন্যতম উদ্যোক্তা চেং ইয়ংশেং জানান, তারা কিন্তু প্রতিটি তরুণীর চারিত্রিক সততা যাচাইয়ের পরই তাদের তরুণদের সঙ্গে দেখা করাবেন।

প্রতিযোগিতাটি বেশ দীর্ঘ, চলবে একটানা ২ মাস ধরে। উদ্যোক্তাদের আরও একটি শর্ত – এতে যারা অংশ নেবে তাদের খুব গরীব বা লোভী মনে হলে নাম রেজিস্ট্রেশন করানো হবেনা। আবার উল্টোদিকে খুব বড়লোক কোনও তরুণীও এখানে এন্ট্রি পাবেন না।

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.