চলতি বছর ২০১৯-এ ভারতের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক অনুষ্ঠান লোকসভা নির্বাচন ঘুম কেড়ে নিয়েছে নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলীয় সমর্থক’দের। আগামী সপ্তাহে ‘লোকসভা নির্বাচন ২০১৯’-এর ফলাফল প্রকাশ হতে চলেছে, তবু এখনও পর্যন্ত প্রত্যেকটি দল সমানভাবে তাদের প্রচারকার্য্য, সমাবেশ এবং পথসভা জারি রেখেছে।
চলতি বছর লোকসভা নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল’গুলির মধ্যে অনেক রেষারেষি লক্ষ্য করা গেছে। প্রত্যকটি দল নিজ নিজ দলপ্রধান’কে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে, এই তালিকায় রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস-এর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এর প্রচারে দলের সমর্থকদের সাথে তাঁকেও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে পথসভা, মিছিল করতে দেখা গেছে বহুবার, আর সেকারণে বেশ ভালোরকম ধকল সহ্য করতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রিকে। সম্প্রতি ১৫ই মে, বুধবার আগরপাড়া’র ঊষুমপুরে এক জনসভায় ভাষণের ফাঁকে পায়ে হেঁটে মিছিল করার পিছনে নিজের স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসঙ্গ তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী’র বক্তব্য অনুযায়ী, গাড়িতে চেপে রোড-শো করার বদলে পায়ে হেঁটে মিছিল করে প্রচার করতেই বেশী পছন্দ করেন তিনি। এর পেছনে তাঁর মূল উদ্দেশ্য হল নিজের শরীর’কে সুস্থ রাখা, আর সেকারণে অনেক সময় বিভিন্ন সভায় দাড়িয়ে দাড়িয়েই সমস্ত ফাইল সই করে থাকেন তিনি। তিনি বললেন, “একবার বসে পড়লেন তো গেলেন! আর উঠতেই ইচ্ছে করবে না। শরীরের নাম মহাশয়। যা সওয়াবে, তাই সয়। গত দেড় মাস ধরে একটানা নির্বাচনের প্রচার করছি। প্রতিদিন ২০ কিলোমিটার করে হাঁটি। আমি না হাঁটলে আমার মস্তিষ্ক হাঁটবে না। এমনকি আমি গলা ও মুখের ব্যায়ামও করি। নিজে সুস্থ থাকলে তবেই তো লড়াইটা জমবে।”
ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বর্তমান সময়ের মেয়েদের তুলনায় আমাদের বাড়ির ঠাকুমা, দিদিমা’দের শরীর অনেক বেশী সুস্থ এবং চনমনে। এর কারণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী; তিনি বললেন, “মেয়েরা ঘর মোছা, মশলা বাটা, তরকারি কাটা, কাপড় কাচা সব করতো। এতে হাত ও কোমরসহ সারা শরীরের ব্যায়াম হয়ে যেত। এখন যন্ত্র আসায় সবাই মেশিনের মতো হয়ে গেছে। অনেক দিন গাড়ি না চালালে মরিচা ধরে যায়। অনেকেই এখন যন্ত্রের মাধ্যমে শরীরচর্চা করেন। তবে কৃত্রিম কিছুই ভালো নয়। মনে রাখবেন, ওল্ড ইজ অলওয়েজ গোল্ড। শুধু হাঁটলেও ক্যালরি বেশি ঝরে।”
সুতরাং বোঝা গেলো যে, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা’র কারণে কখনই নিজের স্বাস্থ্যের ওপর থেকে নজর সরাননা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।