বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য জুড়ে পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির দাবীতে যে আমরণ অনশন চলছে বিকাশ ভবনের সামনে, তা নতুন মোড় নেয় একজন পার্শ্ব শিক্ষকের হঠাৎ মৃত্যুকে ঘিরে। পার্শ্ব শিক্ষক মৃত্যুতে চরম চাপের মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী, তোলপাড় শুরু হয় রাজ্যে, সরব হয়ে ওঠে বিজেপি।
রাজ্যে সরকারি চাকরী প্রার্থীদের অবস্থা যেন দিনকে দিন শোচনীয় হয়ে উঠছে। বেশী শোচনীয় অবস্থা যেন শিক্ষকদের, না হচ্ছে নতুন চাকরী না হচ্ছে পদন্নোতি আর না হচ্ছে বেতন বৃদ্ধি। আর এই বেতন বৃদ্ধি এবং পার্শ্ব শিক্ষকদের স্থায়ীকরনের দাবীতে কদিন ধরেই বিকাশ ভবনের সামনে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে এবং সেখানে কিছু শিক্ষক ওই ঐক্য মঞ্চ থেকেই আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন। সেই অনশনরত শিক্ষকদের মধ্যে তিনজন শিক্ষক গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় বুধবার। আর এই মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় রাজনীতি এবং পরিস্থিতি হয়ে ওঠে অত্যন্ত জটিল।
এই জটিল পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে আরও চাপে ফেলে ধর্না মঞ্চে উপস্থিত হন বিজেপির অনুপম হাজরা। তিনি মঞ্চে এসে সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ হেঁকে বলেন যে, ” এই রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার কথা আর নাই বললাম। এখনতো আইপিএস আইএএসরা চাকর বাকর হয়ে গিয়েছেন। পার্টির কাজ করতে করতে জনগণের কাজটাই ভুলে গিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন,” রাজ্য সরকারের এ হেন লাঞ্ছনা, বঞ্চনা সারা ভারত দেখছে। অধ্যাপকদের এখন অনশনে বসতে হচ্ছে এর থেকে লজ্জার কিছু হয়না।”
বুধবার অনশন মঞ্চ থেকে মারা যান শিক্ষিকা রেবতী রাউল। এর ফলে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ আরও প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। এই প্রসঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে চাপ বাড়িয়ে তিনি আরও বলেন,” অনশন মঞ্চ থেকে ফিরে মারা গেছেন এক শিক্ষিকা। এই মৃত্যুর দায় সম্পূর্ণ শিক্ষামন্ত্রীর। এই মৃত্যুর দায় তাঁকে নিতেই হবে। আরও দুইজন ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের কিছু হলে সেটার দায় নেবেতো শিক্ষামন্ত্রী? এই লজ্জা লুকোবার কোনও জায়গা নেই। আমি ধিক্কার জানাই এই সরকারকে।”
হাইকোর্টের অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,” এখানে কোর্টের আদেশ আছে বলেই আপনারা আন্দোলন করতে পারছেন নয়ত আপনাদের হয়ত পিটিয়ে মেরে ফেলত।” এর সাথে তিনি পার্শ্ব শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, ” আপনাদের দাবী নিয়ে ইংরেজীতে লিখে একটি চিঠি আমাকে দিন। আমি সেটি কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিবের কাছে পৌঁছে দেবো।”
লাগাতার ৭ দিন ধরে পার্শ্ব শিক্ষকদের যে ধর্না বা অনশন চলছে সেই বিষয় এখনও অবধি কোনও মন্তব্য সরকারের তরফ থেকে আসেনি। এখন শুধু অপেক্ষা। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কে জেতে, সরকার না শিক্ষকেরা।