বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা মাত্র পাঁচ সপ্তাহেই প্রাপ্তবয়স্ক হচ্ছে মাত্র এক কেজি আটশো গ্রাম ম্যাশ খাওয়ালেই । ওজন কেজির উপরে এবং দুই কেজি ওজনের মুরগি ম্যাশ খাচ্ছে মাত্র তিন কেজি ছয়শো গ্রাম । অথচ বেড়ে উঠছে খুব দ্রুত । আর এই মাংস খেয়ে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিঃশব্দে ধ্বংস করে ফেলছে ।
একাধিক গবেষণায় গবেষকরা জানিয়েছেন, আমাদের দেশে ঠিক যে উপায়ে ব্রয়লার মুরগীর চাষ হচ্ছে সেটি একেবারেই অস্বাস্থ্যকর । আইনের তোয়াক্কা না করেই অথবা না জেনেই ব্রয়লার মুরগীর চাষ হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের প্রত্যাশায় । প্রধান খাদ্য ম্যাশের সাথে মেশানো হচ্ছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম। পাশাপাশি ইনজেকশনের মাধ্যমে মুরগীর শরীরে সরাসরি দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। ফলে চড়চড় করে বড় হচ্ছে মুরগি, হু হু করে বাড়ছে ওজন।
সাধারনভাবে দেখা গেছে, যেভাবে ব্রয়লার মুরগিদের বড় করা হয়, তা একেবারেই সঠিক পদ্ধতি নয়। সর্বোপরি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির তোয়াক্কা না করেই তাদের ব্রিড করানো হয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরের উপর। মুরগি মোটাসোটা হবে তো তা থেকে বেশি মাংস পাওয়া যাবে, ফলে লাভ হবে বেশি – এই লোভে যেভাবে মুরগিদের মোটা করা হয় তা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, পোলট্রির মুরগি খেলে একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না আমাদের শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, ছোটখাটো পেটের রোগ, গ্যাস, অম্বল, সর্দিকাশি, ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না। ফলে এই রোগ সারাতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্য নিতে হবে ডাক্তারদের। পরবর্তীকালে সেই অ্যান্টিবায়োটিকের একাধিক কুপ্রভাব পড়বে আমাদের শরীরে। এছাড়া ব্রয়লারের কাঁচা মাংসে প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর দোকানে যেভাবে একাধিক মুরগিকে এক সঙ্গে রাখা হয় তাতে দু-পাঁচটার শরীরে সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি প্রবেশ করে না যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক নয়। মুরগী কাটা হয় তখনও জীবিত মুরগির শরীর থেকে কাঁচা মাংসে ব্যাকটেরিয়া চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আর এই জীবাণু যদি আমাদের শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয় ।
বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দাবী করেছেন, মাত্রাতিরিক্ত ব্রয়েলার মুরগি খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তবে এই যুক্তির স্বপক্ষে এখন পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে অনেক সময় দেখা গেছে, ব্রয়লার চিকেন খেলে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। কারন, একাধিক গবেষণয়া দেখা গেছে প্রায় ৬৭ শতাংশ ব্রয়েলার মুরগির শরীরে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে । আর এই ই-কোলাই ফুড পয়জনিং-এর জন্য দায়ি ।