বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ইমাম ভাতা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি, আরএসএস তথা হিন্দুত্ববাদীদের সমালোচনার শেষ নেই । এবার সোমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে রাজ্যের দরিদ্র সনাতন পুরোহিতদের ভাতা দেবার কথা ঘোষণা করেছিলেন, মঙ্গলবার তার পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র আক্রমণ করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ তথা আরএসএস ।
সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের দরিদ্র সনাতন পুরোহিত ব্রাহ্মনদের ‘পুরোহিত ভাতা’ হিসাবে মাসিক এক হাজার টাকা দেবার কথা ঘোষণা করেন । সেই মতে ৮ হাজার পুরোহিতের নামের তালিকা প্রস্তুত করাও হয়েছে । কিন্তু তার একদিন পরেই তীব্র সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা ‘পুরোহিত ভাতা’ ইস্যু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আরএসএস মুখপাত্র জিষ্ণু বসু বলেন, “ব্রাহ্মণরা দান গ্রহণ করেন না। তাঁরা সমাজের যে হিত সাধন করেন তার জন্য দক্ষিণা নেন। সমাজ তাঁদের সেই দক্ষিণা দেয়। এটা সরকারের কাজ নয়।”
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবাংলায় বাংলাভাষী হিন্দুরা বিপন্ন। যদি সাহায্য করার দরকার হয় তাহলে নদিয়া, সন্দেশখালিতে যে হিন্দু তফশিলীরা হার্মাদদের হাতে মার খাচ্ছেন, খুন হচ্ছেন, তাঁদের সাহায্য করুন। অন্যদিকে রাজ্যের ইমামদের জন্য পূর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘ইমাম ভাতা’র ব্যবস্থা করেছিলেন তার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিল গেরুয়া বাহিনী ।
এদিকে ‘পুরোহিত ভাতা’ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারনা করছেন, এটি আসলে ইমাম ভাতার মতো তোষণের রাজনীতিকেই মান্যতা দেওয়া হচ্ছে । বিশেষ করে ২১ শের বিধানসভা ভোটের জন্য জায়গা আরও শক্ত করতে চাইছে শাসক দল । বিশেষ করে যেখানে লোকসভা ভোটের ফলাফল থেকে স্পষ্ট সংখ্যালঘু ভোটের প্রায় ১৪ আনা তৃণমূল পেলেও উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে হিন্দু ভোট এককাট্টা হয়েছে বিজেপির দিকে।
অন্য দিকে জঙ্গলমহলেও শাসক দলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল অনেকেই । লোকসভা ভোটে দেখা গেছে, রাজবংশী থেকে আদিবাসী, সব অংশের ভোট গিয়েছে গেরুয়া বাহিনীর দিকে । ফলে আগামী বিধান সভা ভোটের আগে হিন্দু মনে দাগ কাটতেই এ হেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার- এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
লোকসভা ভোটের ফলাফল রাজ্যের গেরুয়া শিবিরকে আরও চাঙ্গা করে তুলেছে । যেভাবে একের পর এক নিশ্চিত জেতা আসন তৃনমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি, তাতে আগামী বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ হিসাবে দেখতে চাইছে তারা । ফলে তৃণমূল যাতে হিন্দু ভোট ভাণ্ডার আরও বাড়াতে না পারে, তা রুখতে ময়দানে নেমেছে আরএসএস।