বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে করোনার আবহে কাজ কর্ম শিকেয় উঠেছে । তার মধ্যে CESC অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পাঠানোয় সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ পুঞ্জীভূত হচ্ছে । এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামল রাজ্য সরকার । সিইএসসিকে ‘অ্যাডভাইজ়রি’ দিয়ে এক মাসের মধ্যে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের যে ভ্রান্তি হয়েছে তা শুধরে নিতে বলা হল ।
হঠাৎ করে একদিকে যেমন করোনা সংক্রমণ কয়েক ধাপ বেড়ে গেছে, ঠিক তেমনি CESC এবার চড়া হারে বিদ্যুৎ বিল পাঠিয়েছে । গ্রাহকদের মধ্যে অস্বাভাবিক চড়া বিদ্যুতের বিল নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের পারদ দ্রুত চড়ছে । নবান্ন সূত্রের খবর, সরকার সিইএসসিকে ‘অ্যাডভাইজ়রি’ দিচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, এক মাসের মধ্যে বিলের ভুল সংশোধন করুক সংস্থাটি। এই এক মাস কারও থেকে বিলের টাকা নেওয়া যাবে না। বিল মেটাতে না-পারলে লাইন কাটাও চলবে না।
শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুত্মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সিইএসসি-র কর্তাদের সাথে বৈঠকে বসেন । সেখানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দিয়েছেন, কী নিয়মে এবং কোন হিসেবে বিদ্যুত্ বিল তৈরি করা হচ্ছে, তার বিস্তারিত ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে আজ, শনিবারের মধ্যে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বাড়িতে যেখানে গড়ে মাসে হাজার তিনেকের মত বিদ্যুৎ বিল আসে, সেখানে এবার ১২ হাজার টাকার বিল এসেছে ।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, CESCর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা মহামারীর কারনে গত কয়েক মাস গ্রাহকদের কাছ থেকে ঠিক মত মিটার রিডিং নেওয়া সম্ভব হয়নি । ফলে কম করে বিদ্যুৎ বিল করা হয়েছিল সেই সময় । কিন্তু বর্তমানে মিটার রিডিং নেবার পর দেখা যাচ্ছে বাস্তবে নাকি অনেকটাই বিল উঠেছে । যদিও CESCর এই যুক্তি মানতে চাননি বিদ্যুৎ মন্ত্রী ।
সুপার সাইক্লোন আমপানের পরে দীর্ঘ দিন আলো-জল না-ফেরায় রাজ্যের বহু অঞ্চলে পথে নেমেছিলেন বিক্ষুব্ধ মানুষ। অস্বাভাবিক চড়া বিলের অভিযোগ নিয়ে সেই রাগই যেন ফিরে আসছে শহর জুড়ে। ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ, টুইটার তো প্রতিবাদে ছয়লাপ বটেই। সূত্রের দাবি, একেই করোনা মানুষের আর্থিক স্বস্তি কেড়েছে। এর মধ্যে বিল নিয়ে অশান্তির আগুন যে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে, সেই আশঙ্কা চেপে বসছে সংশ্লিষ্ট মহলে। আমপান থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই হয়তো শুরুতেই রাশ ধরতে চাইছে রাজ্য। এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় সিইএসসি-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অঙ্কুশ, যশের মতো টলিউডের অভিনেতারাও। দু’জনেই টুইটারে বিলের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন তোলেন, টাকাটা পাঁচ-ছ’গুণ বেশি হল কী করে? অঙ্কুশের দাবি, ‘৪০০০ থেকে ২১০০০! …পোস্ট দেখে সিইএসসি যোগাযোগ করেছিল। কী ভাবে এত বিল এসেছে জানতে চাওয়ায়, ওরা গত বছর ও এ বছর মিলিয়ে মিটার রিডিং অনুযায়ী যে ব্যাখ্যা দিল, সেটা বোঝা কঠিন। সত্যি বলতে কী ধোঁয়াশায় আছি।’
হাজার তিনেকের বদলে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজারের বিল পেয়েছেন যশ। এমনকি বরাবর আসা শ’খানেকের বিলকে ৮-১০ হাজার হতে দেখার নালিশও মিলছে বিস্তর। তাঁদের প্রশ্ন, যতই গরম পড়ুক আর সকলে ঘরবন্দি থাকুন, এত খরচ হয় কী করে ! মন্ত্রীর দাবি, এই সব প্রশ্ন ও ধন্দের জবাব খুঁজতেই বিল নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা, কোন ‘স্ল্যাব’ নেওয়া হচ্ছে, কেন নেওয়া হচ্ছে, তার জন্য টাকা বাড়ল কি না ইত্যাদি জানিয়ে সংবাদপত্রে বড় বিজ্ঞাপন দিতে বলা হয়েছে সংস্থাকে।