সুকান্ত ভট্টাচার্য’এর কবিতা ‘বিক্ষোভ’

 

বিস্তারিত :

সুকান্ত ভট্টাচার্য বিশ্বযুদ্ধকালীন বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম পথিকৃৎ। বিশ্বযুদ্ধের সময় দেশের যে প্রেক্ষাপট ছিলো, শোষিত-নিপীড়িত দেশবাসীর জীবনে তাতে যে অন্ধকারের মেঘ নেমে এসেছিলো তা অনেক সময়’ই তাঁর কবিতায় ফুঁটে উঠেছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও অগ্রহণযোগ্য খাদ্যব্যাবস্থা’র কারণে মাত্র ২০ বছর বয়েসেই তিনি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুলাভ করেন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩’ই মে। একারনে তিনি ‘কিশোর কবি’ নামে পরিচিত। তাঁর সব লেখা’ই সাধারণত তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা যায়। ‘বিক্ষোভ’ কবিতাটিতেও স্বাধীনতা পূর্ববর্তী শোষিত ও নিপীড়িত ভারতের প্রেক্ষাপট’ই তিনি তুলে ধরতে চেয়েছেন।

 

দৃঢ় সত্যের দিতে হবে খাঁটি দাম,
হে স্বদেশ, ফের সেই কথা জানলাম।
জানে না তো কেউ পৃথিবী উঠছে কেঁপে
ধরেছে মিথ্যা সত্যের টুঁটি চেপে,
কখনো কেউ কি ভূমিকম্পের আগে
হাতে শাঁখ নেয়, হঠাৎ সবাই জাগে?
যারা আজ এত মিথ্যার দায়ভাগী,
আজকে তাদের ঘৃণার কামান দাগি।
ইতিহাস, জানি নীরব সাক্ষী তুমি,
আমরা চেয়েছি স্বাধীন স্বদেশ ভূমি,
অনেকে বিরূপ, কানে দেয় হাত চাপা,
তাতেই কি হয় আসল নকল মাপা?
বিদ্রোহী মন! আজকে ক’রো না মানা,
দেব প্রেম আর পাব কলসীর কাণা,
দেব, প্রাণ দেব মুক্তির কোলাহলে,
জীন্ ডার্ক, যীশু, সোক্রোটিসের দলে।
কুয়াশা কাটছে, কাটবে আজ কি কাল,
ধুয়ে ধুয়ে যাবে কুৎসার জঞ্জাল,
ততদিন প্রাণ দেব শত্রুর হাতে
মুক্তির ফুল ফুটবে সে সংঘাতে।
ইতিহাস! নেই অমরত্বের লোভ,
আজ রেখে যাই আজকের বিক্ষোভ।।

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.