কবি নির্মল চক্রবর্তী বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্গত খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহাকুমা শহরে ১৯৪৩ সালের ২১শে ডিসেম্বর তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা স্বর্গীয় নগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী এবং মাতা শ্রীমত্যা শান্তিকণা দেবী।
অনূঢ়া
অসামান্য রূপ নিয়ে দেহে এল যৌবন,
কী বিচিত্র রূপ-রস-গন্ধ করে বিকিরণ,
সদা লাজে ত্রস্ত ‘উচ্ছলা- যৌবনা সুন্দরী তরুণী।’
কথনে নাহি যায় তার অবয়ব মহিমা,
রূপের লাগি ‘ অঙ্গে সদা বিকশিত গরিমা,
সহসা অন্তরে অনুভূত হয় কম্পমান ধরনী।।
দু’নয়নে নিরীক্ষণ করে পথিক প্রবর
সৌম্যমূর্ত্তি , সুমুখেই সে যে গণিছে প্রহর,
দেহে ল’য়ে চলে নবযৌবনের বিচিত্র সম্ভার।
নেত্রযুগলে তার উদগ্র যে কামনা,
বলিতে নাহি পারে কভূ সুপ্ত বাসনা,
দিব্যদৃষ্টিতে সঞ্চিত দেহে-মনে প্রেমের সঞ্চার।।
শরীরী ভাষায় ব্যাপ্ত ছিল আকাঙ্খা-অতৃপ্তি।
নয়নযুগলে তার উজল সে তীব্র দীপ্তি,
হৃদয়-মাঝারে জাগরিত হয় বিশ্বগ্রাসী ক্ষুধা।
পেলব হাতের স্পর্শ ময়ূর পেখমসম,
অনুভূতি আনে সদা অন্তরে গভীরতম,
পটলচেরা চোখ, বিস্ময় জাগে কন্ঠভরা সুধা।।
আঁখিদ্বয় দূরবর্ত্তী উজল-তারকাসম,
অস্ফুট বেদনা শতেক অব্যক্ত দিনলিপি,
সহাস্যে বহন ক’রে চলেছে রূপবহ্নি যুবতী।
অন্বেষণ করে, কোথা হ’তে পাবে তার সাথী,
কেবা দিতে পারে তার মনের মাধুরী
যৌবন-পিয়াসী সখা, নবযৌবনের সুখস্মৃতি।।
অপলক দৃষ্টিতেই চেয়ে থাকে অবিরত,
জনবহুল প্রান্তরে আগন্তুক শত শত,
অতর্কিতে দিব্যকান্তি প্রিয়তম নায়ক যে আসে।
সদাহাস্য তরুণ যেন দেহভরা জৌলুস,
শান্ত-নম্র-ভদ্র, অন্তরে একরাশ পৌরুষ
বীরদর্পে নিজে ব্যক্ত করে, অনূঢ়াকে ভালবাসে।।