যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য বৈধ অনুমোদনের প্রক্রিয়া বা গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব পাওয়া আরও কঠিন হয়ে গেল। ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব পাওয়ার নতুন নিয়ম ঘোষণা করেছে। বিশেষ করে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ গুলো থেকে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ গ্রীন কার্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যায় যাদের ভবিষ্যত নাগরিকত্বের জন্য অন্তরায় হবে আইনটি।
নতুন ঘোষিত নিয়মে মেডিকেড, ফুড স্ট্যাম্প, পাবলিক হাউজিং এবং অন্যান্য ফেডারেল সহায়তার প্রোগ্রামগুলোর উপর যে কোনও বহিরাগতদের গ্রিন কার্ড পাওয়া প্রায় দুরূহ হয়ে যাবে। নতুন নিয়মে নতুন নিয়ম অনুসারে মেডিকেড, ফুড স্ট্যাম্প, পাবলিক হাউজিং এবং অন্যান্য ফেডারেল সহায়তার প্রোগ্রামগুলোর উপর যে কোনও নির্ভরতা এখন “পাবলিক চার্জ” হিসাবে যোগ্য হতে পারে এবং অভিবাসীদের স্থায়ী মর্যাদার জন্য বিবেচনা করা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে।
“পাবলিক চার্জ” শিক্ষা, বয়স, সম্পদ এবং ইংরেজিতে দক্ষতাও এই নিয়মের অধীনে সম্ভাব্য । গ্রিন কার্ড হলো যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য বৈধ অনুমোদন। নাগরিকত্বের জন্য গ্রিন কার্ড পাওয়ার পাঁচ বছর পর আবেদন করা যায়। নিজেদের ভরণপোষণে সক্ষম এবং ভবিষ্যতে কোনোভাবেই সরকারের বোঝা হয়ে উঠবেন না এমন প্রমাণ দিতে পারলেই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ড অথবা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে নতুন নিয়মে।
পূর্বে যেসব অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের আইনি অনুমোদন পেয়েছে তারা এই নীতিমালার আওতাভুক্ত। যেসকল ব্যক্তিরা মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে না। তবে তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
উল্ল্যেখ্য অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা যারা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা পান সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় তাদের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা কার্যকর হবে না। মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য, উদ্বাস্তু ও আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এই নীতিমালা কার্যকর হবে না।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন আদেশটি ঘোষণা করেন মার্কিন সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস এর পরিচালক কেন কুচিনেল্লি। নতুন নিয়ম ঘোষণার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে ও থাকতে আগ্রহীরা আত্মনির্ভরশীল হবে। ‘আমরা চাই এমন মানুষ এ দেশে স্থায়ী বসবাসের জন্য আসুন, যাঁরা নিজেদের খরচ বহন করতে পারেন। এই নিয়মের ভিত্তিতে এ দেশে অভিবাসননীতি পরিচালিত হয়েছে।’ এই নীতিমালা ৬০ দিনের মধ্যে কার্যকর হওয়ার সময় নির্ধারিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করে থাকে। তাদের মধ্যে ৩ লাখ ৮২ হাজার আবেদনকারী নতুন নীতিমালার আওতায় পড়তে পারে। নতুন আইনটি জারির ফলে সারা দেশে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলেছে।