বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: কথায় বলে, বউমা মেয়ের মতো হয়। কিন্তু বাস্তবিক এমন দৃষ্টান্ত খুঁজে বের করা খুবই কঠিন। তবে নিজের কাজ দিয়ে এই কথা সত্য প্রমাণ করে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনিপুর জেলার মুকুন্দ মাইতি। নিজের একমাত্র ছেলে মারা যাওয়ার পর বউমা’র ভবিষ্যতের কথা ভেবে নতুন করে তার পাত্র খুঁজে তার বিয়ে দেন ভদ্রলোক। সত্যিই এই পুরানো জং ধরা চিন্তা-ভাবনার সময়ে এমন আধুনিক মনুষ্যত্বের পরিচয় দেওয়ার দরুন অনেকটা সম্মানের যোগ্য ভদ্রলোক।

একমাত্র ছেলে অমিত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর অনেক সাধ করে তার বিয়ে দিয়েছিলেন মুকুন্দ মাইতি। বিয়ের এক মাস পরেই বউকে বাবা-মা এর কাছে রেখে মহীশূরে নিজের কর্মস্থলে ফেরত চলে যান অমিত মাইতি। সেই থেকেই উমা বাড়জিশুয়া গ্রামে শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে রয়েছে। বাড়ির বউ এর বদলে দিন দিন মেয়ে’ই হয়ে উঠলো সে।

এরপর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাড়ি ফেরার সময় ট্রেনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অমিত। ভুবনেশ্বরে ট্রেন থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি।

একমাত্র পুত্রের আকস্মিক মৃত্যুতে কষ্ট পেলেও পুত্রবধূকে মেয়ের মতোই আগলে রেখেছিলেন মকুন্দবাবু। এরপর ১৯ বছরের উমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তিত হন মুকুন্দবাবু এবং তাঁর স্ত্রী। অবশেষে খোঁজাখুঁজি করে সুপাত্র দেখে বউমা’র বিবাহ স্থির করেন।

গতকাল সোমবার পাঁশকুড়ার কালিমন্দিরে স্বপনের সঙ্গে বিয়ে হল উমার। বিয়ের জন্য নিরধারিত পাত্র স্বপন পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। মন্দিরে মালাবদলের পর যথাসম্ভব বিয়ের অনুষ্ঠানও করেন মুকুন্দ। বিয়ের খরচ থেকে অতিথি আপ্যায়ন, সব খরচ তিনি নিজেই বহন করেন।

মুকুন্দবাবুর এই কাজের জন্য গোটা গ্রাম তাঁর সামনে সম্মানে মাথা অবনত করেছে। একারণে গতকাল বিয়ের অনুষ্ঠানে গ্রামের সকলেই উপস্থিত ছিলেন।

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply