বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক-গত ২৫ জুলাই এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুরের জন্য প্রায় তিন ঘন্টা ফেরি আটকে থাকায় অ্যাম্বুলেন্সে তিতাস ঘোষের মৃত্যু। এ বিষয়টি পরবর্তীতে গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২৯ জুলাই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিলেন- যুগ্মসচিব শাহনওয়াজ দিলরুবা খান এবং উপসচিব এস এম শাহ্ হাবিবুর রহমান হাকিম।
পরবর্তীতে হাইকোর্টে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি রিট করা হয়। ঐ রিটে ভিআইপি সম্পর্কে একটি বিশেষ রায় দেয় হাইকোর্ট। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি ছাড়া কেউ ভিআইপি নয়। বাকি সব রাষ্ট্রের কর্মচারী।
উল্লেখ্য নড়াইলের কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল তিতাস ঘোষ। মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হলে তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ সম্বলিত একটি এ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গত মঙ্গলবার প্রতিবেদন দাখিল করে। নৌপরিবহন সচিব আব্দুস সামাদের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্ল্যেখ করা হয়- ভিআইপির কারণেই ফেরিটি তিন ঘণ্টা দেরি করে। অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে থাকার সময় রোগীর মৃত্যু হয়। সেই ভিআইপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কেউ ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন যুগ্মসচিব, তার নাম আব্দুস সবুর মন্ডল, তিনি এটুআই প্রকল্পে আছেন।
নৌপরিবহন সচিবের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আমরা ঘাটের লোকজন, স্থানীয় সাংবাদিক, আবদুস সবুর মন্ডল, মারা যাওয়া তিতাসের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। যুগ্মসচিব ম্যানেজারের সঙ্গে কখন, কতবার কথা বলেছেন, কী বলেছেন তা বিটিআরসি থেকে আমরা নিয়েছি। নিহত তিতাসের আত্মীয়-স্বজন ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। ফোনরেকর্ড ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য অনুযায়ী আমরা দেখেছি যে ফেরিটি তিন ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। আর এই বিলম্বের জন্য যুগ্মসচিব আব্দুস সবুর মন্ডল দায়ী।
প্রতিবেদনে দেখা যায় ভ্রমণসূচি ছাড়া আব্দুস সবুর মন্ডলকে ভিআইপি সুবিধা দিতে ঘাটের ম্যানেজার আব্দুস সালাম, উচ্চমান সহকারী ফিরোজ আলম, প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া ফেরি দেরি করিয়ে কর্তব্যে অবহেলা করেছে। এ জন্য তাদেরও দায়ী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দোষীদের তথ্য দেওয়ার সাথে নৌপরিহন সচিব কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য- নৌপরিহবের সাকুর্লার অনুযায়ী লাশ, অ্যাম্বুলেন্স, মূল্যবান পচনশীল দ্রব্য অগ্রাধিকার দিয়ে পারাপার করতে হবে। এগুলো মানা হয়নি পরবর্তী যথাযথভাবে মানার জন্য বলা হয়। এছাড়া ভিআইপি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে আগে থেকে ভ্রমণবিবরণী পাঠাতে হবে।