বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার মানবতা বিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার দায়ে মো. আব্দুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁর ফাঁসির রায় এসেছে যুদ্ধাপরাধ আদালতে। তিনি মুসলিম লিগ কর্মী সামাদ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর সদস্য হিসেবে পুঠিয়ার গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হন বলে উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে। আদাল ১৭৪ পৃষ্ঠার রায় দেয়। এ রায়ে বলা হয় আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা চারটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগেই তাকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।

সামাদ এর আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান এই রায়ে সন্তুষ্ট নন, সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য অনুযায়ী “সাঁওতাল পল্লীর লোকদের সাথে আসামির বাবার জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। ১৯৬৪ সালে জমি বিনিময় করে সাঁওতালরা এসেছিল। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার বছরে এসে সাঁওতালরা বিনিময়কৃত ৫০ একর জমি ফেরত চাইলে আসামি, আসামির বাবা এবং এলাকার লোকদের সাথে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে আসামির বাবাও মারা যান। আমি মনে করি এটা জমি সংক্রান্ত বিরোধের মামলা।”

আর্ন্তজাতিক আদালতের নিয়ম অনুযায়ী, রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আসামি যে অপরাধ করেছে, সন্দেহাতীতভাবে সেসব অপরাধ আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।

উল্ল্যেখ্য এ পর্যন্ত আসা ৩৯টি মামলার ৯৭ আসামির মধ্যে ছয়জন বিচারাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মোট ৮৯ জনের সাজা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬২ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় এসেছে।

প্রসঙ্গত সামাদের নাশকতা মামলায় তদন্ত চলার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি তাকে যুদ্ধাপরাধের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মোট পাঁচটি অভিযোগ আনলেও যাচাই-বাছাই শেষে চারটি অভিযোগের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে প্রসিকিউশন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়ে পুঠিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান এবং চারজন সাঁতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘরে লুণ্ঠন এবং ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগে অংশ নেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

Mr. Shuva is a News and Content Writer at BongDunia. He has worked with various news agencies all over the world and currently, he is having an important role in our content writing team.

Leave A Reply