বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ পৃথিবীতে এমন মানুষ খুব কমই আছেন যারা পেটের রোগের সমস্যায় ভুগছেন না । নিত্যদিনের খাবারের একটু এদিক ওদিক হলেই দেখা দেয় হজমের সমস্যা । জমতে থাকে গ্যাস আর তা থেকে পেট ব্যাথা, গলা-বুক জ্বলা । সাধারনভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় গ্যাস থেকে পেটে বা পিঠে ব্যাথা একটি পরিচিত সমস্যা, যা কম বেশি সবাইকে ভুগতে হয় । অনেক সময় এই সমস্যা এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, যার ফলে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতেও সমস্যা হয় । গ্যাস থেকে পেটে বা পিঠে ব্যাথা হলে কিম্বা গলা বুক জ্বালা করলে আপনি হাতের কাছে কিছু ঘরোয়া সমাধান করতে পারেন ।
গ্যাসের ফলে ব্যাথা কমাতে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিঃ
- ব্যায়াম: গ্যাসের ব্যথা কমাতে কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম করলে গ্যাসের ব্যথা কিছুটা হলেও নিরাময় হয়। এজন্য মেঝেতে উপুর হয়ে বসে পা দুটি সাইকেল চালানোর মতো রেখে হাত দুটি পাশে রাখুন। বড় করে নিঃশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন। খাওয়ার পরে কিছুটা হাঁটলেও গ্যাসের সমস্যা কমে। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা কমাতে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে পারেন।
- পুদিনা পাতা: গবেষণায় দেখা গেছে, পুদিনা পাতার তেল ডায়রিয়া, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিপেসমোডিক গুণাগুণ পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত গ্যাসের ব্যথায় ভোগেন তারা খাওয়ার আধঘন্টা আগে পুদিনা পাতার বড়ি (যা কিনা বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায়) খেতে পারেন। গ্যাসের ব্যথা নিরাময়ে এই পাতার রস, তেলও খেতে পারেন।
- হিট প্যাড: কিছু গবেষণা বলছে, হিটিং প্যাড ব্যবহার করলে অতিরিক্ত গ্যাসের ফলে সৃষ্ট পেট ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত উত্তপ্ত একটি গরম প্যাড এক ঘন্টা পর্যন্ত পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
- ম্যাসাজঃ প্রতিদিন খাবারের আগে এবং পরে একটি সাধারণ পেটের ম্যাসাজও আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।ম্যাসাজ করার জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন –
প্রথমে মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে তার উপর শুয়ে পড়ুন। শুয়ে থাকার সময় আপনার হাঁটু বাঁকানো এবং পা সমতল অবস্থানে থাকবে । এবার আপনার উভয় হাত পেটের উপর রাখুন এবং একটি বৃত্তাকার উপায়ে ম্যাসাজ শুরু করুন। এটি ক্লকওয়াইজ এবং এন্টি- ক্লকওয়াইজ উভয়ই করুন। এই ভাবে ম্যাসাজ চালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়ুন।আপনি যে জায়গাগুলোতে ব্যথা অনুভব করছেন সেখানে সামান্য চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। পেটে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না হওয়া অবধি ম্যাসাজ করতে থাকুন।
জল পানঃ গ্যাসের ফলে ব্যাথা হলে জল পান করতে পারেন । একটু চিন্তা করে দেখুন যে পরিমাণে আপনার জল খাওয়া উচিৎ ছিল সেই পরিমাণে জল পান করেছেন কি না ? জল শরীর শীতল রাখার পাশাপাশি হজমেও সাহায্য করে ।
সাবানঃ গ্যাসের সমস্যায় পেটে ব্যাথা হলে অনেক সময় চিত হয়ে শুয়ে পেটের বিশেষ করে নাভির চারপাশে সাবান জল হাল্কাভাবে লাগিয়ে রাখলে ব্যাথার উপশম হয় ।
এমতিতেই সব সময় সহজ পাচ্য খাবার এবং হালকা খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল । তবে ঘরোয়া এসব পদ্ধতি অনুসরণ করার পরও গ্যাসের কারনে পেট ব্যথা না কমে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ ।