কাশ্মীরে ২২ টি জেলা। এই বাইশ জেলার মধ্যে অন্যতম বান্ডিপুরা। বান্ডিপুরা জেলায় একটি গ্রাম বাংলাদেশ। অনেক বাংলাদেশী বা ভারতীয়রা চিন্তাই করতে পারবেন না কাশ্মীরে একটি গ্রামের নাম স্বাধীন বাংলাদেশের নামে।
কাশ্মীরে যাওয়ার স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখি। আগের দিনে ধনীদের একটি অভ্যাস ছিল ঋতু পরিবর্তনের সাতে স্থান পরিবর্তন। সেই স্থান পরিবর্তন এখন সম্ভব না হলেও আমরা বেড়াতে ভালবাসি। পৃথিবীর যেন সব রূপ-সৌন্দর্য ভিড় এখানে।
প্রকৃতির বিচিত্র স্বাদের অলঙ্কার দিয়ে সাজানো এ ভূস্বর্গ। এক সময় কাশ্মীর শব্দটি ভৌগোলিকভাবে শুধু বিশাল হিমালয় এবং পিরপাঞ্জাল পর্বতমালার উপত্যকাকে নির্দেশনা করা হতো। এখন কাশ্মীর বলতে বোঝায় একটি বিশাল অঞ্চল যা ভারতীয়-শাসিত রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর, পাকিস্তানশাসিত গিলগিট-বালতিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীর প্রদেশ এবং চীন-শাসিত আকসাই চীন এবং ট্রান্স-কারাকোরাম ট্রাক্ট অঞ্চলসমূহ নিয়ে গঠিত। তাই বলা চলে কাশ্মীরের দুটি অংশ। ভারতশাসিত জম্মু কাশ্মীর এবং অন্যটি পাকিস্তান অধিভুক্ত আজাদ কাশ্মীর।
কাশ্মীর নিয়ে সাহিত্যিকদের আগ্রহও কম নয়। রবীন্দ্রনাথও কাশ্মীরকে অগ্রাহ্য করেন নাই। বলাকা কাব্যগ্রন্থের কিছু কবিতা কাশ্মীরে লেখা। সেই ভূস্বর্গ কাশ্মীরে বাংলাদেশ কেন হলো?
স্বাধীন বাংলাদেশের সাথে কাশ্মীরের গ্রাম বাংলাদেশেরও রয়েছে যোগসূত্র। ১৯৭ সালে জুরিমন নামে কাশ্মীরের একটি গ্রামে আগুন লাগে। আগুনে এই গ্রামের সাধারণ মানুষ ঘর ছাড়া হয়ে যায়। সে সয় পুড়ে যাওয়ার কিছুটা দূরে ফাকা জায়গায় সবাই মিলে গড়ে তোলেন ঘর। একই বছর বাংলাদেশ স্বাধীণ হল। বাংলাদেশের মানুষের সেই যুদ্ধ ত্যাগের কথা মনে করে গ্রামবাসী তাদের দু:খ কষ্টের সাথে মিল করে গ্রামের নাম রাখেন বাংলাদেশ। গ্রাম হিসাবে মর্যাদা পায় ২০১০ সালে। এখন সেখানে পঞ্চাশের বেশী গ্রাম। এখানকার মানুষের জীবিকা মাছ ধরা।
উলার হ্রদের তীরে ভাসমান গ্রামটিতে বাইরের মানুষের আনাগোনা নেই । গ্রামটির সৌন্দর্য কোনো অংশেই কম নয়। চারদিকে পানি, পেছনে সুউচ্চ পর্বত, সব মিলিয়ে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে রয়েছে গোটা গ্রামজুড়ে। নাগরিক সুবিধার এখনও অনেক কিছুই গ্রামবাসীর হাতের মুঠোয় আসেনি। দিন দিন উন্নতি হচ্ছে সবকিছুর। সেখানে এরই মধ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।