বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সম্প্রতি এনপিআর (জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি ) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলকে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক । কিন্তু এবার এনপিআর ফর্মে থাকা বাড়তি আটটি প্রশ্ন নিয়ে শুরু হতে চলেছে বিতর্ক । জানা গেছে, আটটি প্রশ্নের মধ্যে বাবা-মায়ের জন্মস্থান, আধার নম্বর ইত্যাদি থাকছে ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে পশ্চিম বাংলা এবং কেরলে চিঠি পাঠালেও এই দুই রাজ্যের বিরোধীরা মনে করছেন এনপিআর হল এনআরসি-র প্রথম ধাপ। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনপিআর স্থগিত রেখেছেন। অপর দিকে কেরলের পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে এনপিআর হবেই না। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল সরকারই রাজ্যে এনপিআর কার্যকর করা নিয়ে সরকারি ভাবে কেন্দ্রের কাছে আপত্তি জানিয়েছে। বাকি রাজ্যগুলির কাছ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও আপত্তি বা চিঠি আসেনি।
উল্লেখ্য, আগামি ১লা এপ্রিল থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে জনগণনার প্রথম পর্ব। এর আগে ২০১০ ও ২০১৫ সালে এনপিআরের তথ্য নেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের বিষয়টি একটু ভিন্ন । কারন এবার থাকছে বাড়তি আটটি প্রশ্, যেগুলি ফর্ম পুরন করার সময় উত্তর দিতে হবে । সমস্যা হল, ওই প্রশ্নগুলিতে উত্তরদাতার মাতৃভাষা, জন্মস্থান, বাবা-মা কোথায় কত সালে জন্মেছেন, আধার নম্বর প্রভৃতি থাকছে ।
তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, এনপিআরের প্রশ্ন দেখে মনে হচ্ছে, মূলত বাংলাভাষীদের নিশানা করতেই ওই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের যুক্তি, ‘‘দিল্লি বা বেঙ্গালুরুতে থাকা কোনও বাঙালি যদি তাঁর মাতৃভাষা বাংলা, বাবা-মায়ের জন্মস্থান ও-পার বাংলা (বতর্মানে বাংলাদেশ) বলে জানান, তা হলে কেন্দ্র সেই ব্যক্তিকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করার কৌশল নিতে পারে বলেই আশঙ্কা। আর তিনি যদি ধর্মে মুসলিম হন তা হলে তো সোনায় সোহাগা।’’
তবে এই বাড়তি আটটি প্রশ্ন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, এনপিআরে উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। যদি কেউ মনে করে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেবে না, তাহলে তা না দিলেও চলবে । যদিও এই যুক্তি নিয়ে খোদ স্বরাষ্ট্র-কর্তাদের মধ্যেই মতপার্থক্য রয়েছে। বিরোধী শিবিরের মতে, বাবা-মায়ের জন্মস্থান না-জানানো বা আধার না-থাকার যুক্তি যাঁরা দেখাবেন, তাঁদের একেবারে শুরুতেই নিশানা করা হতে পারে। কারণ কোনও ব্যক্তি তাঁর বাবা-মায়ের জন্মস্থান জানেন না— এই যুক্তি আদৌ কেন্দ্রের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।