বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কালী পূজার আগের দিন আমরা সকলেই জানি চৌদ্দ শাক খেতে হয় । সন্ধ্যায় জ্বালতে হয় চৌদ্দ প্রদীপ । কিন্তু কেন করা হয় এগুলি ? পঞ্জিকা মতে এর কারন কি জানেন ?
এই বিষয়ে কিছু কিছু মত পার্থক্য রয়েছে । তবে কেউ কেউ মনে করেন কালী পূজা হয় অমাবস্যায় । অমাবস্যার আগের দিন অর্থাৎ কালীপুজোর আগের দিন রাতকে বলা হয় ‘ভূত চতুর্দশী’ । ‘ভূত চতুর্দশী’র রাতে নাকি বিদেহী আত্মারা নেমে আসে মর্ত্যলোকে । এই দিন বাঙালি ঐতিহ্যে ১৪টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ১৪ রকমের শাক ভক্ষণের বিধি রয়েছে ভূত চতু্র্দশীতে।
ত্রেতা যুগে ভগবান রামচন্দ্রের চৌদ্দ বছর বনবাস হয় । অনেকে এর সঙ্গে রামচন্দ্রের ১৪ বছর বনবাসের সঙ্গে যোগের কথা বলেন ।তবে মতভেদে পার্থক্য থাকলেও এর মূল বিষয় হল চতুর্দশী তিথি । ভরা অমাবস্যয় চারিদিকে থাকে ঘুরঘুটে অন্ধকার । সেই ঘন অন্ধকার দূর করতেই বাড়ির চারপাশে দীপ জ্বালানোর রেওয়াজ বাঙালি ঐতিহ্য ।
এবার আসা যাক ‘ভূত চতুর্দশী’ বা কালীপূজার আগের দিন ১৪টি শাক ভক্ষণের নিয়ম প্রসঙ্গে ।আগের দিন ১৪ শাক খাবার প্রসঙ্গ এসেছে প্রধানত স্বাস্থ্যরক্ষার্থে ।একটু হিসাব করলেই দেখা যায়, কালীপূজার সময় আমাদের দেশে ঋতু পরিবর্তন হয় । গরম কমে গিয়ে আসতে শুরু করে শীতের হিমেল হাওয়া । শীতের হিমেল হাওয়ায় ভর করে ঠান্ডার আমেজ এসে যায় এই সময়। হিমেল হাওয়ায় ভাসতে থাকে হিম, যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন অসুখের সৃষ্টি করে। মরসুম পাল্টানোর সময়ে প্রধানত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেই ১৪টি শাক খাওয়া দরকার । অন্তত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাতে বিষয়টি তাই দাঁড়ায়।
পঞ্জিকা মতে বাঙ্গালিরা যে চৌদ্দটি শাক খায় সেই শাকগুলি হল যথাক্রমে— ওল, কেঁউ, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা এবং শুষণী ।