হুটোপুটি করে যখন খুশি, যেদিকে খুশি নিশ্চিন্তে বাঁধনছাড়া হয়ে বেরিয়ে পড়ায় তো একেবারে আদর্শ ভ্রমণ। তবে ভ্রমণস্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া ও রাত্রিবাসের সুব্যবস্থা থাকলে তো সোনায় সোহাগা। শুধুমাত্র ছুটি কাটানো বা অনাবিল বিনোদন ভ্রমণের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, বরং একথা বলা যায় যে ভ্রমণ মানুষের জীবন অনুভবের একটা অংশ।
সাধারণভাবে আমরা বাঙালী’রা বর্ষার কয়েক’টা মাস বাদ দিয়ে প্রায় বাকি সারা মাস’গুলি ভ্রমণের আদর্শ সময় হিসেবে বেছে নিই। ব্যস্ত শহরের কোলাহলকে দু’হাতে পাশে সরিয়ে দিতে সপ্তাহন্তে যদি কোনও ব্যবস্থা থাকে, তাহলে ক্ষতি কী? West Bengal Tourism
যেমন, নদীকেন্দ্রিক কোনও গ্রামে স্থানীয় নৌকায় বনবিহার, কিম্বা কোনও গ্রামের মেঠো রাস্তায় ধূলি মেখে রাখালিয়া গ্রামের সুরে সুর ভাজতে ভাজতে গোচক্রযানে বেশ কয়েক মাইল হালকা দুলকি চালে পাড়ি দেওয়া’টাও বেশ মজাদার ভ্রমণ।
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগে নদীবক্ষে ‘ভাসমান বাজার’, শ্রাবণের ভরা গঙ্গায় ‘ইলিশ উৎসব’, কিম্বা ভাসমান নৌকায় প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা সম্প্রতি চালু হয়েছে। কিন্তু, সত্যি কথা বলতে এর কোনোটাই নিজে পরখ করার সুযোগ পাইনি। কিন্তু ভ্রমণপিপাসু বাঙালীর কাছে এ’সকল ছোটো ছোটো উদ্যোগ ভালো হলেও যথেষ্ট নয়।
বাঙালী অপেক্ষায় আছে আরও অনেক অনেক অভিনব আয়োজনের।
বাঙালী মানে অধিকাংশ’ই মধ্যবিত্ত জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাই যদি স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ পরিষেবা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তার সাথে সাথে সাপ্তাহিক পারিপার্শ্বিক ভ্রমণগুলি’কে পকেটসুলভ ও সার্বজনীন সহজসাধ্য করে তোলা যায়, তবে ভ্রমণপিপাসু বাঙালীর জন্যে তা যথেষ্ট সুবিধাজনক হয়ে উঠবে।
মধ্যবিত্ত বাঙালীর সুখের ভ্রমণ আরও মধুর হবে, যখন সরকারি ব্যবস্থাপনায় লজ, তাছাড়াও বেসরকারি হোটেল বা থাকার জায়গাগুলি সহজলভ্য হয়ে উঠবে। আর সেই ব্যবস্থা করতে পারলে দুই বাংলা হবে সত্যিকারের ভ্রমণরাজ্য।