বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার করার করার অভিযোগ ওঠে ভারতীয় সেনা জওয়ান’দের বিরুদ্ধে। বহু পরিচিত সংবাদ মাধ্যম বিবিসি তাদের খবরে কাশ্মীরের কিছু নির্যাতিত মানুষের সাক্ষাৎকার তুলে ধরেছেন। বিবিসি অবশ্য তাঁদের ভিডিও’র প্রথমেই লিখে দিয়েছে, “কারো কারো কাছে এই ভিডিওটি অস্বস্তির কারণ হতে পারে।”
চলতি বছর ৫ই আগস্ট তারিখে ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি খারিজ করার মধ্য দিলে জম্মু-কাশ্মীর এর বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন বহির্বিশ্বের সাথে সাথে কাশ্মীরের যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি, পাশাপাশি ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
কিন্তু সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যম বিবিসি কাশ্মীর উপত্যকার বাসিন্দা’দের খোঁজ নেওয়ায় উপত্যকার এক অন্য চিত্র সামনে চলে আসে। এতদিন পর্যন্ত কাশ্মীরে বন্দী’দের সাথে যে নির্মম ব্যবহার করেছে সেনা জওয়ানেরা, তারই প্রমাণ দেন কিছু কাশ্মীরবাসী। এই ঘটনায় উপত্যকাবাসীরা এতটাই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের মধ্যে কেউই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে ইচ্ছুক নন।
সেনা জওয়ান দের অত্যাচারে পীড়িত এক ব্যক্তি বললেন, “আমি ওদের বলেছিলাম, আমাদের পেটাবেন না, গুলি করুন। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম যে তারা যেন আমাকে গুলি করে। কারণ তাদের নির্যাতন ছিল সহ্যের বাইরে।”
আরও একজনের ভাষায়, “আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমাদের অপরাধ কী? তারা কিছুই শুনতে চাইছিল না, শুধু পিটিয়েই যাচ্ছিল। তারা আমার শরীরের প্রতিটি অংশে পিটিয়েছে। আমরা অচেতন হয়ে গেলে আমাদের চেতনা ফেরাতে বৈদ্যুতিক শকও দেয়। তারা আমাদের মুখে মাটি গুঁজে দিতো। তারা বলতো চেঁচিও না। কেন চেঁচাচ্ছো? “
ভিডিও’তে এক নির্যাতিতের কথা বলা হয়, যিনি তার দেহের বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখিয়েছেন। ওই ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমে জানান, ওই দাগগুলি নির্যাতনের কারণে হয়েছে। তিনি আরো বললেন, “তারা আমার দাড়ি ধরে এতো জোরে টানছিল যে আমার মনে হচ্ছিল, আমার দাঁতসহ উঠে যাবে। তারপর আমি জ্ঞান হারাই। আমার সাথে থাকা এক তরুণ আমাকে জানায়, তারা আমার দাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারপর সেনাবাহিনীর কেউ তাদের ঠেকায়।”
যদিও, উপত্যকাবাসী’দের এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। বেসামরিক নাগরিকদের সাতে কোনো জবরদস্তি করা হয়নি বলে নিশ্চিত করে জানানো হয়।