স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অনেক কারনে আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই ।স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায় জানা থাকলে সে ক্ষেত্রে সুবিধা হয় । অনেক সময় দেখা যায় অনেক কিছু মনে রাখতে পারছি না । আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করছি কেন আমাদের স্মৃতি শক্তি হ্রাস পাচ্ছে এবং স্মৃতি শক্তি ফিরে পাবার জন্য বা হ্রাসের প্রতিকার করার জন্য কি করা উচিত ।

এমন একটা সময় ছিল যখন আপনি জটিল ও দুর্বোধ্য বিষয়ও খুব সহজেই মনে রাখতে পারতেন,  কিন্তু এখন  আপনি বাইরে বের হতে যাচ্ছেন,  মানিব্যাগটা কোনভাবেই খুঁজে পাচ্ছেন না,  প্রয়োজনের সময় খুঁজে পাইনা , আমার স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে,  আমি পড়া মনে রাখতে পারিনা, তাঁর নামটা কি যেন ?  এই ধরনের কথা কমবেশি আমরা বলে থাকি । তবে ভুলে যাওয়ার সমস্যা কারও কারও ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে । তবে কারও ক্ষেত্রে সেটা একেবারে অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে গেলে কেউ কেউ গুরুতর মানসিক সমস্যায় পড়ে যেতে পারেন ।

আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণ গুলো কি কি জানতে পারলে একবার সেগুলি নিজেদের সাথে  মিলিয়ে নিলে হয়ত বোঝা যাবে কেন  মনে রাখা যাচ্ছে না এবং আমাদের কি করা উচিৎ এর জন্য । আমাদের মানব শরীরের সবচেয়ে রহস্যজনক অংশটি সম্ভবত মানুষের মস্তিষ্ক । মস্তিস্ক কিভাবে কাজ করে,  তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন নতুন তথ্য জানার চেষ্টা করেছেন সবসময় । গবেষকরা তাদের গবেষণার ফল হিসাবে কি পেয়েছেন সেগুলির সাথে  নিজের অভ্যাস তুলনা করলে অনায়াসে  মাত্র কয়েকটি সহজ উপায়ে আপনিও চমৎকারভাবে আপনার স্মৃতিশক্তির উন্নতি করতে পারেন ।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

ঠিক কি কি কারনে আমাদের স্মৃতি শক্তি কমে যেতে পারে ?  এবং কিভাবে স্মৃতি শক্তি বাড়ানো সম্ভব ?

১) কম ঘুমের অভ্যাসঃ  কম ঘুমের অভ্যাস আপনার স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে দেয় । ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা প্রমাণ করেছেন যে,  পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে ।  আর ঠিকমতো না ঘুমানোর ফলে আলজেইমার এর মত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে একজন ব্যাক্তি ।আলঝেইমার স্মৃতি ভুলে যাওয়ার একটি মারাত্মক রোগ । আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত সবকিছু ভুলে যায়,  স্মৃতি দুর্বল হওয়ায় কিছুই মনে করতে পারেন না । আলঝেইমার আক্রান্ত ব্যক্তি  পরিচিত ব্যাক্তি থেকে শুরু করে  একটু আগে ঘটে যাওয়া জিনিসের কথা স্মরণ করতে পারেন না ।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

উল্লেখ্য, গবেষকরা দেখেছেন, আমাদের ঘুমের সময় মস্তিষ্কের কোষগুলো সাধারণত ক্ষতিকারক এবং বিষাক্ত পদার্থগুলোকে সরিয়ে নিতে থাকে । যদি কেউ নিয়মিত পর্যাপ্ত না ঘুমায়, তাহলে এই ক্ষতিকারক অ বিষাক্ত পদার্থ হতে পারে আমাদের স্বাভাবিক জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি । সুতরাং আপনি কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না এর অন্যতম একটি কারণ হতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানোর জন্য । জেনে রাখা ভাল,  একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের নিয়মিত 6 থেকে 8 ঘন্টা ঘুমানো  প্রয়োজন । মনে রাখবেন কম ঘুমানো মানে আপনি নিজেই নিজের ক্ষতি করে চলেছেন ।

২) হতাশাঃ  দীর্ঘদিনের হতাশা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারন । আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, নতুন কিছু শেখার আগ্রহ কমে যাওয়া, কোন কিছুর উপর মনোযোগ ধরে রাখতে না পারায,  এমনকি আপনার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণ হতে পারে আপনার দীর্ঘদিনের হতাশা ।  হতাশা শুধুমাত্র আপনার জীবনে কয়টি ক্ষতি করেই থেমে থাকবে না,  হতাশার কারনের প্রভাবে আপনি হতে পারেন প্রচন্ড খিটখিটে মেজাজি,   প্রচন্ড সন্দেহপ্রবণ,  অথবা অযথা  ভয় ও দুশ্চিন্তার শিকার হওয়া ।  কোন কিছুই আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হয় এমনকি এর ফলে আপনি স্থায়ীভাবে মানসিক রোগী হয়ে যেতে পারেন । হতাশা মানুষের জীবনে আসবেই,  তাই বলে যত বেশি প্রশ্রয় দেবেন, তাকে আঁকড়ে ধরে রাখবেন,  ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবেন আপনি । তাই যত দ্রুত সম্ভব হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে দিন । বিশ্বাস রাখুন আগামীতে যা হবে তার জন্য আপনি প্রস্তুত । হতাশ না হয়ে বরং চিন্তা করুন আপনার সুন্দর সময় গুলোর কথা । সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখুন ।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

৩) জল শুন্যতাঃ  জল শুন্যতার  ক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি সংবেদনশীল । জল শুন্যতা হতে পারে আমাদের  স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারন ।আমাদের মস্তিস্কে প্রায় ৮০ শতাংশ জল ।আর এই কারনে  জল শুন্যতা স্মৃতি শক্তি হ্রাস পাবার কারন ।যদি মস্তিষ্কে স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য পরিমাণ জলের ঘাটতি থাকে,  তাহলে এর কারণে যে যে সমস্যায় পড়তে পারেন আপনি, তা হল  কাজে মনোযোগ কমে যাওয়া,  অনিদ্রা রোগে আক্রান্ত হওয়া ।  এই দুইটি একসাথে দায়ী,  অল্পতেই কোন কিছু ভুলে যাওয়া,  এমনকি  স্নায়ুবিক বৈকল্য দেখা দিতে পারে এর ফলে । এইকারনে জল শুন্যতা রোধ এর জন্য নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণেন জল পান করুন,  গরম স্থান এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন । ফলের জুস বা রস জল শুন্যতা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকারী ভুমিকা নেয় ।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

৪) খাদ্য তালিকাঃ অবাক হলেও সত্যি, আমাদের খাদ্য তালিকা আমাদের স্মৃতি শক্তি হ্রাস পাবার কারন হতে পারে । গবেষণায় জানা গেছে, বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার আমাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে দেয় । অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে ধীর করে দেয় এবং কোন কিছু শেখার সামর্থ্যকে কমিয়ে দেয় । ফলে কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না ।  স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে । এর কারন অতিরিক্ত মিষ্টি আমাদের মস্তিষ্কের নিউরাল কানেকশানকে দুর্বল করে । তাই বিজ্ঞানীরা গুরুত্বসহকারে বলেছেন কারখানায় উৎপাদিত মিষ্টি, বিশেষ করে সফট ড্রিংক, চাটনি, বিশেষ করে বাচ্চাদের খাবার এগুলো শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক ।তবে যে সকল খাবারে  ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড আছে, যেমন বাদাম, সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল এগুলি স্মৃতি শক্তির বৃদ্ধির পাশাপাশি শারীরিক বিকলঙ্গতার  প্রবণতা কমায় । তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনা দরকার ।

৫) নিয়মিত পড়াশোনার অভ্যাসঃ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা প্রমান করেছেন নিয়মিত পড়াশোনা স্মৃতিশক্তি বাড়ায় । কারণ নিয়মিত পড়াশোনার চর্চা মানুষের বুদ্ধিমত্তার কোষগুলোকে নতুন নতুন উপায়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিতে থাকে । এমনকি  মস্তিষ্কের যে স্থানগুলো আগে কখনো ব্যবহার হয়নি সেগুলো কে সচল করে প্রশিক্ষণ দিতে থাকে ।নিয়মিত পড়াশোনার সময়টাতে মানুষের মস্তিষ্কের মনোযোগ অথবা বুদ্ধিমত্তার জন্য দায়ী কোষগুলোতে সচল করতে রক্ত চলাচল কার্যকর করে । তাই অবশ্যই পড়াশুনার চর্চা মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় । তবে মনে রাখতে হবে  টিভি দেখা কিংবা কম্পিউটারে গেম খেলার ক্ষেত্রে এটা কাজ করে না । তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আপনার পছন্দের মজার কিছু বই হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করুন,  নিয়মিত পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন স্মৃতিশক্তি কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ।

৬) ছবি আঁকাঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে ছবি আঁকা স্মৃতি শক্তির ক্ষমতা বাড়ায় । গবেষণায় দেখা গেছে, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গেলে ক্রিয়েটিভ কাজা,  যেমন ছবি আঁকা,  শিল্পের জন্য চিন্তা,  মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষতিকর কোষগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি করে দেয় । তখন দুর্বল হয়ে যাওয়া কোষগুলো আবার সচল হয়ে উঠতে থাকে । তবে এটা সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয় তুলনামূলকভাবে যাদের বয়স বেশি তাদের জন্য । যাদের স্মৃতিশক্তি ধারন কারী কোষগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ বেশি বয়সীদের জন্য ।  বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন,  62 থেকে 70 বছর বয়সীদের ভেতর আর্টের  কেমন প্রভাব পড়ে সেটা নিয়ে পরীক্ষা করেন ।অর্ধেক অংশকে ইতিহাস আর বাকি অর্ধেক অংশকে ছবি আঁকার কাজ করতে দেওয়া হয় । পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যারা ছবি এঁকেছেন তাদের স্মৃতিশক্তি, আর যারা ইতিহাস চর্চা করেছেন তাদের চেয়ে বেশি সাড়া দিচ্ছে ।

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

৭) ঘৃণার ও ভালবাসার প্রভাবঃ  ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন ভালোবাসা ও ঘৃণা এই দুটি মানুষের মস্তিষ্কের একই স্থান থেকে সৃষ্টি হয়েছে । তাই এদের প্রভাব প্রায় একই রকম । তবে মস্তিষ্কের কোষে  সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য আছে বেশ কিছু । ঘৃণা মানুষের মধ্যে বিচার-বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় । এই কারনে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার অন্যতম একটি ঘৃণা ।

কিছু কিছু টিপস আমাদের নিত্যকার জীবনে মেনে চললে একদিকে যেমন সুস্থ থাকা যায়, তেমনই আমাদের স্মৃতি শক্তির ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলা যায় অনেকাংশে ।

১. ব্যায়ামে মস্তিষ্কের আকার বাড়ে

  • শরীর আর মনের সুস্থতার চাবিকাঠি হচ্ছে ব্যায়াম। এটা খুব সত্যি কথা। শরীরচর্চা করলে দেহের পেশির সাথে সাথে মস্তিষ্কের আকারও বৃদ্ধি পায়। ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের সিন্যাপসের সংখ্যা বাড়ে। এর ফলে মগজে নতুন নতুন কোষ তৈরি হয়।
  • আর কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের ফলে মগজে বেশি হারে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ সরবরাহ হয়। আর আপনি যদি খোলা জায়গায় ব্যায়াম করেন, তাহলে বাড়তি পাওনা হলো ভিটামিন ডি।
  • যেমন, যদি আপনার শখ হয় বাগান করা, তাহলে আরো কিছু বন্ধুকে সাথে নিয়ে বাগান করুন। পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে ভাল লাগলে, সাথে যাওয়ার সঙ্গী খুঁজে বের করুন।(স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়)

২. হাঁটাচলায় বাড়ে স্মৃতিশক্তি

  • বাগান করার মধ্য দিয়ে শরীরের ব্যায়াম হয়, তেমনি মনেরও ব্যায়াম হয়।
    বহু গবেষণায় এটা প্রমাণিত। অভিনেতারাও এই কাজটা করে থাকেন।
  • কোন শব্দ বা বাক্য যদি আপনি হেঁটে হেঁটে মুখস্থ করার চেষ্টা করেন, তাহলে সেটা বহুদিন ধরে আপনার মনে থাকবে।
  •  এরপর কোন বক্তৃতা বা প্রেজেন্টেশন মুখস্থ করতে হলে সেটা হেঁটে হেঁটে মুখস্থ করার চেষ্টা করুন। কিংবা একটু বাইরে ঘুরে আসুন।

৩. শরীরে গ্লুকোজের মাত্রায় হেরফের হলে আপনার মনেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা।

  • যেসব খাবার আপনারা খুব পছন্দ সেগুলো খেলে আপনার মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড এরিয়ায়’ ডোপামিন রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আপনার মনে খুশি খুশি ভাব হয়।
  • কিন্তু মস্তিষ্কের শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার পেটের দিকেও নজর রাখতে হবে।
  • মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রে একশো ট্রিলিয়নেরও বেশি অণুজীব বসবাস করে। এরা আপনার মস্তিষ্কের সঙ্গেও সংযোগ রক্ষা করে। আসলে, পাকস্থলীকে অনেক সময় ‘দ্বিতীয় মগজ’ বলে ঢাকা হয়।
  • পেটে নানা ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার ঢুকলে এসব অণুজীবের মাধ্যমে তার সুফল মস্তিষ্কে পর্যন্ত পৌঁছায়।
  •  মস্তিষ্কের কোষ ফ্যাট অর্থাৎ স্নেহ পদার্থ দিয়ে তৈরি। তাই খাবার থেকে তেল-চর্বি একেবারে বিদায় না করাই ভাল।
  • বাদাম, তেলের বীজ, মাছ ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে জন্য ভাল।
  •  খাবার সময় একা একা না খাওয়াই ভাল। সবার সাথে বসে খাবার খেলে তা মস্তিষ্কের জন্য সুফল বয়ে আনে।

৪. খুঁজে নিন অবসর

  • পরিশ্রমের ফাঁকে ফাঁকে অবসর নেয়াও জরুরি।
  • স্বল্প মাত্রার মানসিক চাপ আসলে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এতে বিপদের সময় বা জরুরি প্রয়োজনে পরিস্থিতিকে দ্রুত মোকাবেলার শক্তি পাওয়া যায়।
  •  হরমোনের কারণে দেহ-মন চাঙা হয় এবং মনোযোগের একাগ্রতা বাড়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ মস্তিস্কের জন্য খুবই খারাপ।
  • কাজের ফাঁকে অবসরের সময় বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • আপনার মস্তিষ্ককে অবসর দিয়ে, এবং নিজেকে মূলত: সুইচ অফ করে, আপনি আপনার মগজের ভিন্ন একটি অংশকে ব্যায়াম করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
  • রিল্যাক্স করতে অসুবিধে হলে যোগব্যায়াম কিংবা মাইন্ডফুলনেস চর্চার সাহায্য নিতে পারেন। এগুলো আপনার দেহের স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করবে।

৫. নতুন কিছু করুন

  • নতুন কিছু শেখার মধ্য দিয়ে মগজকে আরো সক্রিয় করে তুলুন।
  • মগজের শক্তি বৃদ্ধির একটা পথ হলো নতুন কোন কাজ করার জন্য মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করা।
  • ছবি আঁকা কিংবা বিদেশি ভাষা শিক্ষার মধ্য দিয়ে এটা করা সম্ভব।

৬. সুরের মাঝে লুকিয়ে আছে শক্তি

স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

  • সুরের মাধ্যমে জেগে ওঠে মস্তিষ্ক। বাড়ে মেধা।
  • সঙ্গীত যে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে, তার প্রমাণ রয়েছে।
  • কেউ গান শোনার সময় যদি তার মস্তিষ্কের ছবি তোলা যায়, তাহলে দেখা যাবে পুরো মস্তিষ্ক সুরের প্রভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
  • মস্তিষ্ক সঙ্গীতের স্মৃতি দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারে।
  • সঙ্গীত ডিমেনশিয়ার মত মানসিক অবস্থা ঠেকাতে বেশ কার্যকরী।
  • গানের দল বা কয়্যারে যোগ দিন। আপনার প্রিয় ব্যান্ডের গানের অনুষ্ঠান দেখতে যেতে পারেন।

৭. বিছানায় শুয়ে পরীক্ষার পড়া

  • বিছানার ওপর শুয়ে-বসে পড়ার সুফল রয়েছে।, বলছেন বিজ্ঞানীরা।
  • দিনের বেলা যখন আপনি নতুন কিছু শিখছেন, তখন আপনার মস্তিষ্কে এক স্নায়ুকোষের সাথে নতুন একটি স্নায়ুকোষের সংযোগ তৈরি হয়।আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন সেই সংযোগ আরও জোরদার হয়। এবং যা শিখেছেন তা স্মৃতি হিসেবে জমা হয়।
  •  পরীক্ষায় জানা যাচ্ছে, আপনি যদি শোবার আগে কাউকে একটা লিস্ট দিয়ে বলেন সেটা মুখস্থ করতে, তাহলে পরদিন সকালে সে সেটা খুব সহজেই মনে করতে পারবে। কিন্তু যদি সেই একই লিস্ট সকাল বেলা দিয়ে বলেন সন্ধ্যের সময় মুখস্থ বলতে তাহলে সেটা মনে করা বেশ কঠিন হবে।
  •  কোন দু:খের স্মৃতি নিয়ে শোবার সময় চিন্তাভাবনা না করাই ভাল। এতে মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।একই কারণে শোবার আগে হরর ছবি দেখাও বারণ। এর বদলে সারা দিনের যেসব ভাল ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো মনে করার চেষ্টা করুন।
  • পরীক্ষার পড়ার সময় প্রশ্নের জবাবগুলো শোবার সময় মনে করার চেষ্টা করুন। এবং চেষ্টা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ুন।

৮. ঘুম ভাঙ্গার পর 

  • দিনের শুরুর সাথে তাল মিলিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠুন।
  • ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুম হলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুম হলে মস্তিষ্ক সজাগ হওয়ার সময় পায় না।
  •  দিনের পুরোটাকে ভালভাবে কাজে লাগানোর চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে কিভাবে আপনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তার মধ্যে।
  • সূর্যের কিরণ যখন আপনার বন্ধ চোখের পাতা ভেদ করে ঢুকে পড়ে, তখন সেটা মস্তিষ্ককে কর্টিসল হরমোন ছড়িয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করে। এর ফলে আপনি জেগে ওঠেন। তাই কী পরিমাণ কর্টিসল হরমোন আপনার দেহে ছড়িয়ে পড়ে, তার ওপর নির্ভর করবে দিনটা আপনার কেমন যাবে।
  •  এমন অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহার করুন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে যার সুর ক্রমশই বাড়তে থাকে । 

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.