বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ শিক্ষিত পরিবারের বিবেচকহীন ছেলের জন্য বিপদে পড়তে পারে গোটা রাজ্য, এমন কি গোটা দেশ – এমনই সব সমালোচনা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । এমনকি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত মেনে নিতে পারেননি এমন বিবেচকহীন কাজ করায় । এবার কলকাতায় প্রথম করোনা আক্রান্ত যুবকের চিকিৎসক বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব এল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ।
বেঙ্গালুরুর এক রেলকর্মীর ছেলে সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন। কিন্তু তিনি ছেলের বিদেশ থেকে ফেরার বিষয়টি গোপন করেন । শাস্তি হিসাবে রেল সেই ব্যাক্তিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে । এবার কলকাতার প্রথম করোনা আক্রান্ত যুবকের চিকিৎসক বাবার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের দাবি তুলল চিকিৎসক সংগঠন। বর্তমানে অবশ্য সেই যুবক বেলেঘাটা আইডিতে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
অবশ্য ১৮ বছরের করোনা আক্রান্ত যুবকের অভিভাবকের প্রতি সাধারন মানুষের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক । কারন উক্ত যুবকের মা রাজ্য সরকারের একজন বড় আমলা । অন্য দিকে তার বাবা এখন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ । অথচ করোনার মত ঈর্ষাকাতর বিষয় নিয়ে গোটা পৃথিবী যেখানে আতঙ্কে ভুগছে, সেখানে করোনা আক্রান্ত যুবক এবং তার বাবা-মা ঠিক কি করেছেন ? না তার মা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ সচিব নিজের ছেলেকে ভর্তি তো করেনি উপরন্তু জানা গিয়েছে লন্ডনে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন ওই আমলা ও চিকিৎসক-পুত্র। তিনি নিজেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। গত ১৫ মার্চ কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন ওই তরুণ। তার পরের দিন মায়ের সঙ্গে যান নবান্নেও। বাঙুর হাসপাতালে ছেলেকে না দেখিয়ে কিম্বা কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে কলকাতার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, শপিংমল থেকে বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছেন । এমন কি ওই অবস্থায় নবান্নে সারাদিন অফিস করেছিলেন ওইদিন। কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে। এই ঘটনার পর স্বেচ্ছায় নিজেকে গৃহবন্দি রেখেছেন আলাপনবাবু। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তীও রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।
অন্য দিকে ওই তরুণের বাবা তথা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শ্যামল ঘোষ কৃষ্ণনগরে রোগীও দেখেন। ফলে প্রশ্ন ওঠে, সারা পৃথিবীজুড়ে এমন মহামারীর অবস্থা দেখেও এই রকম একটা শিক্ষিত পরিবার কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটাল তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে । রাজ্যসভার সদস্য এবং আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)-এর পশ্চিমবঙ্গের চেয়ারম্যান শান্তনু সেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা আইএমএ-এর দিল্লির দফতরে আবেদন করা হয়েছে, যাতে ছেলের রোগ গোপন করা চিকিৎসক শ্যামল ঘোষের আইএমএ-এর সদস্যপদ বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা এও বলেন, সর্বভারতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে যাতে ওই চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে তারা।