জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মন্ত্রী মাসাহিরো ওকামুরা বলেছেন, তার দেশ মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন চায়। রোববার (৮ অক্টোবর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
কোমুরার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ইহসানুল করিম বলেন, ‘জাপান জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন চায়। তিনি বলেন, কক্সবাজারে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং জাপানও তাদের সাহায্য করতে চায়।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক যারা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য স্থায়ী সমাধানের জন্য জাপানের অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানান। শেখ হাসিনা মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং জাপানের সহায়তায় বাস্তবায়িত ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের মতো বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের উল্লেখ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে জাপানের অবদানেরও প্রশংসা করেন।
জবাবে জাপানের উপমন্ত্রী বলেন, নবনির্মিত তৃতীয় টার্মিনাল উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, টোকিও ‘বিগ-বি’ সহযোগিতার অধীনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, জাপানের সহযোগিতায় নির্মিত মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে জাপানের উপমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে ঢাকা ও নারিতার মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করা হয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার জাপানকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিয়েছে, যেখানে জাপানি উদ্যোক্তারা পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগ করছেন।
গত এপ্রিলে জাপানে তার সরকারি সফরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই সফর ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে।
১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর করা।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।