সংগৃহীত ছবি


একাত্তরের ডিসেম্বরে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছিল বাঙালি জাতি। দেশের বিভিন্ন এলাকা শত্রুর কবল থেকে মুক্ত করার পর মুক্তিযোদ্ধারা বন্ধু বাহিনীর সহায়তায় ঢাকার কাছাকাছি আসে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানিরা বিদেশি সাহায্যের দিকে তাকিয়েছিল। কিন্তু সাহায্য না নিয়ে নিশ্চিত পরাজয় জেনে তিনি শেষবারের মতো দেশের সেরা শিশু বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। 1971 সালের 12 ডিসেম্বর রবিবার ছিল।

এর একদিন আগে ১১ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার রুশ রাষ্ট্রদূত ভোরন্তসভকে ফোন করে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, আগামীকাল (১২ ডিসেম্বর) দুপুরের আগে ভারতকে অস্ত্রবিরতি মেনে নিতে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র নিজেই প্রয়োজনীয় সামরিক ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ভারতকে যুদ্ধবিরতির জন্য বাধ্য করার আমেরিকার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের দীর্ঘ বক্তব্যের পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়। এদিকে, 12 ডিসেম্বর, আমেরিকার সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র 24 ঘন্টা দূরে গভীর সমুদ্রে প্রবেশ করে। সেই রাতে, প্রাদেশিক সরকারের বেসামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী আলবদর এবং আলশামসের কেন্দ্রীয় কমান্ডারদের হেডকোয়ার্টারে ডেকে পাঠান। তার সভাপতিত্বে গোপন কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা তৈরি করা হয়। ফরমান আলী তার হাতে বুদ্ধিজীবীসহ বিশিষ্টজনের তালিকা দেন।

এদিন মেজর আবু তাহেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভালুকা ও হালুয়াঘাট হয়ে ময়মনসিংহ সড়কের দিকে অগ্রসর হয়। দিনাজপুরের খানসামা থানায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর হামলা। যুদ্ধে ১৫ জন মিত্র ও সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। একজন মেজরসহ পাকবাহিনীর ১৯ জনকে আটক করা হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে নীলফামারী হানাদার মুক্ত হয়। এদিন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও আশপাশের এলাকায় ছত্রীবাহিনীকে মিত্রবাহিনী অবতরণ করে। রাতে মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। শুরু হল প্রচন্ড যুদ্ধ।

নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিন অত্যন্ত কড়া ভাষায় ভারতকে পাকিস্তান ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তিনি বলেন, মাতৃভূমি রক্ষায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে বদ্ধপরিকর। কোনো শক্তি পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না। এদিকে রেডিও পিকিং ঘোষণা করেছিল যে সোভিয়েত ইউনিয়ন মূলত চীনকে দমন করার জন্য ভারতের মাধ্যমে পাকিস্তানে আক্রমণ করতে চায়। এদিকে এপিআই মহাব্যবস্থাপক ও সাংবাদিক নিজামুদ্দিন আলাবাদর বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। যখন তার বাড়িতে হামলা হয় তখন তিনি বিবিসির জন্য খবর লিখছিলেন। পরে আলবদরের হাতে নিহত হন। ১২ ডিসেম্বর সকালে নরসিংদী হানাদার মুক্ত হয়।






আগের খবরহঠাৎ পায়ের পেশী টান পড়লে কী করবেন?
পরবর্তী খবরকঠোর আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে ভোক্তা ঋণ $2.92 বিলিয়ন হ্রাস পেয়েছে


Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.