বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ এমনটা যেন হবারই ছিল । আমেরিকার চোখ রাঙ্গানি যে কোনভাবেই চিন সহ্য করবে না, চেংডুর মার্কিন কূটনীতিক কার্যালয় বন্ধের নির্দেশ দেওয়া থেকে ভালভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছিল । এবার মার্কিন কূটনীতিক কার্যালয় থেকে নামিয়ে ফেলা হল মার্কিন পতাকা, সেখানকার দায়িত্ব নিয়েছে চিনা কর্মকর্তারা ।
আমেরিকার সাথে সম্পর্কের অবনতির জের হিসাবে চিনের চেংডুর মার্কিন কনস্যুলেট খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল বেজিং । সোমবার (২৭ জুলাই) বেঁধে দেয়া সময় শেষ হওয়ার আগে, মার্কিন কনস্যুলেটের কর্মরতদের বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।সাথে সাথে সরিয়ে ফেলা হয় নামফলক। নামিয়ে নেয়া হয় মার্কিন পতাকা। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে হিউস্টনের চীনা কনস্যুলেট বন্ধে ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চেংডুর মার্কিন কূটনীতিক কার্যালয় বন্ধের নির্দেশ দেয় বেজিং ।
এদিকে এই ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, গেলো ৩৫ বছর ধরে তিব্বতসহ চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এ কনস্যুলেট।‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। চীনে থাকা অন্যান্য কনস্যুলেটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ওই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সংযোগ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো আমরা।’ অন্যদিকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর চীনা কর্মকর্তারা কনস্যুলেটে প্রবেশে করে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন।
জানা গেছে, চিনের চেংডুর মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হন। চীনা পতাকা উড়ানোর পাশাপাশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা। এদিকে একের পর এক পদক্ষেপের কারণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। করোনা ভাইরাস এবং বাণিজ্য ইস্যুতে চীনের সঙ্গে দফায় দফায় বিবাদে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হংকংয়ে চীনা বিতর্কিন আইন বাস্তবায়নের নিন্দা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
সোমবার চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভিতে মার্কিন পতাকা সরিয়ে নেয়ার একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। রবিবার বাসে করে যখন মার্কিন কর্মকর্তারা কনস্যুলেট ত্যাগ করেন, তখন তারা স্থানীয়দের টিটকারির সম্মুখীন হন বলে জানায় বার্তা সংস্থা এএফপি। একই ভাবে গত সপ্তাহে চীনা কূটনীতিকরাও হিউস্টনের কনস্যুলেট ছাড়ার সময় বিক্ষোভকারীদের ব্যাঙ্গাত্মক আচরণের শিকার হন।
ইতিহাস বলছে, ১৯৮৫ সালে চেংডুতে কনস্যুলেট স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। যার মাধ্যমে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় ওয়াশিংটন তাদের কার্যক্রম চালাতো। ওই অঞ্চলে রয়েছে চীনের স্বায়াত্বশাসিত অঞ্চল তিব্বত। স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘদিন যাবত সেখানে আন্দোলন চলছে। শিল্প এবং ক্রমবর্ধমান পরিষেবা খাতের পাশাপাশি চেংডুকে মার্কিন কৃষি পণ্য, গাড়ি এবং যন্ত্রপাতি রফতানির সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতো যুক্তরাষ্ট্র। চেংডু মিশন বন্ধ হওয়ায় এখন চীনের মুলভূণ্ডে চারটি মার্কিন কনস্যুলেট রয়েছে। একমাত্র দূতাবাসটি রয়েছে রাজধানী বেজিং-এ । একইভাবে, হিউস্টন কনস্যুলেট বন্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে চীনের আরো চারটি কনস্যুলেট রয়েছে। চীনা দূতাবাস রয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে।