বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ এর আগেও পার্শ্ব শিক্ষকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে রাতের অন্ধকারে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশিত হবার পর রাজ্য জুড়ে ধিক্কার উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে । গতকাল প্রাথমিক শিক্ষকরা তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে যে বিক্ষোভ মিছিল করেছিল তাতে ফের উত্তাল হল কলকাতা ।
গত কয়েকমাস ধরেই একের পর এক শিক্ষক বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে মহানগর কলকাতার বুকে ।সেই আন্দোলন ছিল কখনও প্রাথমিক শিক্ষকদের আবার কখনও কখনও পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন । গতকাল বুধবার ফের প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনে শিক্ষামন্ত্রী এবং পুলিশের ভূমিকার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে গোটা রাজ্য জুড়ে । প্রাথমিক শিক্ষকদের শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি অভিযান ঘিরে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই স্তব্ধ হয়ে যায় যাদবপুরের বাঘাযতীন এলাকা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে এগোতে থাকা মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। বাঘাযতীন মোড়ে রাস্তায় বসে পড়ে অবস্থান শুরু করেন শিক্ষকরা । এরপর শিক্ষামন্ত্রী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার কথা জানান। কিন্তু সেই বৈঠকেও ক্ষোভ মেটেনি। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী বললেন, “রাস্তায় বসে পড়াটা কোনও পথ হতে পারে না। যুক্তিযুক্ত দাবি হলে সরকার শুনবে । কিন্তু তা যথপোযুক্ত জায়গায় বলতে হবে।” বাংলার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিকেলেই বলে দিয়েছিলেন, এই ভাবে রাস্তায় বসে প্রাথমিক শিক্ষকরা অন্যের অসুবিধা সৃষ্টি করে আন্দোলন করে ঠিক কাজ করছে না । কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিতে অনড় থেকে অবস্থান চালিয়ে গেছেন । অতপর, সেই আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি – রাত গড়াতেই দেখা গেল পদক্ষেপ করল প্রশাসন । রাতেই বাঘাযতীনে অবস্থানরত বহু প্রাথমিক শিক্ষককে আটক করল পুলিশ ।
গত জুলাই মাসে লাগাতার অনশন চালিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকরা তাদের আন্দোলনের সফলতা পেয়েছিল । ২৬০০ টাকা থেকে বেড়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড হয় ৩৬০০টাকা ।কিন্তু গোল বেঁধেছে অন্য জায়গায় । প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে বাড়লেও পে-ব্যান্ডের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন হয়নি । অর্থাৎ যার ভিত্তিতে বেতনের বেসিক বৃদ্ধি পাওয়ার কথা তা প্রায় কিছুই হয়নি। ফলে, মাসের শেষে অসংখ্য প্রাথমিক শিক্ষক কয়েক হাজার টাকা হাতে কম পাচ্ছেন। হিসেব করে দেখা যাচ্ছে, আসলে গ্রেড পে বেড়েছে ৩০০টাকা । বলা হয়েছিল মাদ্রাসা শিক্ষকদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনে বৈষম্য থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষক আন্দোলনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাস প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, “নেতৃত্বের একাংশকে যাদবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা মহিলারা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছি।” তাঁর অভিযোগ, “টেনে হিঁচড়ে আমাদের সহকর্মীদের গাড়িতে তুলেছে পুলিশ। গণতন্ত্রের লজ্জা এই প্রশাসন।”