বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একজন চাণক্য এবং অপরজন রোবট নামেই পরিচিত। দেশের দুই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী, অর্থাৎ প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং মনমোহন সিং হঠাৎই করে বসলেন বিস্ফোরক মন্তব্য। যে উস্কে দিল কিছু অস্বাভাবিক বিতর্ক।
ভারতীয় রাজনীতিতে এবং জাতীয় কংগ্রেসের দুজন মহীরুহ হলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। একজন পরিচিত তাঁর বিনম্র চরিত্র এবং বিখ্যাত মৌনতার জন্য এবং অপরজন পরিচিত তাঁর বিশাল পাণ্ডিত্য এবং ক্ষুরধার বুদ্ধির জন্য। যখন এই রকম ব্যাক্তিত্ব কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলেন সেই বিষয়টা কখনও কখনও জন্ম দেয় বিতর্কের।
দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং করে ফেলেন কিছু বিতর্কিত মন্তব্য। ভারতে ১৯৮৪ সালে ঘটা শিক দাঙ্গা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন যে, সেই সময় খুব সহজেই সেই দাঙ্গা এড়ানো যেত যদিনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরসিমা রাও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালের কথা শুনতেন। এই প্রসঙ্গে মনমোহন সিং বলেন যে, সেই সময় ইন্দ্রকুমার গুজরাল নরসিমা রাওকে সেনার হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিতে বলেন কিন্তু সেই মতামত ধার্য করা হয়নি বলে সেইদিনের সেই ভয়ঙ্কর দাঙ্গা ঘটেছিল বলে মনে করেন মনমোহন সিং।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন যে, ১৯৮০ সালে যখন বেশী সংখ্যক ভোটে জিতে ইন্দিরা গান্দী কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন তখনই তিনি একটি বিশাল অপারেশন চালান অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে। সেই অপারেশানের নাম ছিল “ব্লুস্টার”। পবিত্র মন্দির চত্তরে সেনা নামিয়ে তিনি হত্যা করেন খলিস্তানি জঙ্গিদের। এরপরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হন তাঁর দুই শিখ নিরাপত্তা রক্ষীর হাতে। আর এর ফলস্বরূপ দেশে শিখদের ওপর শুরু হয় অত্যাচার। খুন করা হয় তাঁদের। আর এই ঘটনাকেই মনমোহন সিং বিজেপির উত্থানের কারণ হিসেবে ধার্য করেছেন। তিনি মনে করেন সেদিন যদি প্রধানমন্ত্রী গুজরালের কথা শোনা হত তবে হয়ত শিখ হত্যালীলা ঠেকানো যেত। তাঁর এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে জাতীয় রাজনীতির একটি অজানা দিক যেমন খুলে দেয়, তেমনই জন্ম দেয় বিতর্কের।
অন্যদিকে প্রধান্মন্ত্রী গুজরালের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন যে, বিজেপি সরকারকে ক্ষমতায় আনার পেছনে দায়ী স্বয়ং কংগ্রেস নেতৃত্ব। তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্ব যদি ইন্দ্রকুমার গুজরালের ফ্রন্ট সরকারকে সমর্থন করতেন তবে তারাই সরকার গঠন করত এবং সেটা না হওয়ায়, বিরোধীপক্ষ সক্রিয় হয়ে সরকার গঠনে সমর্থ হয়। এই দুই বর্ষীয়ান নেতার মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় চর্চা এবং বিতর্ক। এখন দেখা যাক বর্তমান কংগ্রেস হাইকমান্ড এই প্রসঙ্গে কি মতামত দেন।